পটুয়াখালীতে লঞ্চ টার্মিনালের শ্রমিক ও হকারদের মারধোর করেছে নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ ও সাবেক ছাত্রদল নেতা। এসময় নৌবন্দরের আরিফ উদ্দিন নামে এক কর্মকর্তা টার্মিনালের ভাসমান হকারদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে তাদের মালামাল নদীতে ফেলে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি মোঃ মহিবুল্লাহ চৌধুরী সেই চিত্র তার ব্যবহৃত মোবাইলে ধারন করলে নৌবন্দরের ওই কর্মকর্তা তার কাছ থেকে জোর পূর্বক তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ধারনকৃত ভিডিও চিত্র মুছে ফেলে।
পটুয়াখালী নৌবন্দরের শ্রমিক মোঃ ইলিয়াস মোল্লা ও লাবলু বেপারী অভিযোগ করে বলেন, শনিবার দুপুরের দিকে ঢাকা নৌবন্দরের ৪ থেকে ৫ জন কর্মকর্তারা পটুয়াখালীতে আসেন। এসময় পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও বর্তমান লঞ্চঘাটের ইজারাদার সবির গাজীর ছোট ভাই গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লব ওই কর্মকর্তাদের নিয়ে পুরান বাজারের বোর্ড অফিসের খেয়াঘাটে পৌছায়। এসময় ঢাকা নৌ বন্দরের ইনচার্জ যুগ্ম পরিচালক পরিচয়ে আরিফ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি আমাদের কাছে জানতে চায়, ওই ঘাটে মালামাল নামানো হচ্ছে কেন। এ সময় শ্রমিকরা পটুয়াখালী পৌর মেয়র ও ডিসির অনুমতি নিয়েছে বলে জানালে নৌ বন্দরের ওই কর্মকর্তা এবং ছাত্রদল নেতা পৌর মেয়র ও ডিসিকে অশ্লীল ভাষায় ইঙ্গিত করে গালমন্দ করে ইলিয়াস ও লাবলুকে ব্যাপক মারধোর করে। এসময় ইলিয়াস ও লাবলু আপত্তি জানালে নৌবন্দরের ওই কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের জেলে ঢুকিয়ে দেয়া এবং কেটে নদীতে ভাসিয়ে ভয় দেখায় বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা। পরে তাদের টেনে লঞ্চ টার্মিনালে নিয়ে আসেন। হামলা শিকার শ্রমিকরা আরো জানায়, নতুন ইজাদার দায়িত্ব নিয়ে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিকদের কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। পরে আমরা অন্য পন্থ্যা বেছে সংসার চালাই।
এদিকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে পৌছানোর পরে ঘাটে ভাসমান ১০ থেকে ১২টি খাবার সামগ্রী দোকান ভাংচুর করে তাদের মালামাল নদীতে ফেলে বন্দরের ওই কর্মকর্তা। এসময় ভাসমান দোকান মালিক ফারুক, ফয়সাল কামালসহ কয়েকজন দোকানীকে মারধোর করেন ঢাকার ওই নৌবন্দর কর্মকর্তা। মারধোর এবং দোকান ভাংচুরের দৃশ্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক সংবাদকর্মী তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ধারন করলে নৌবন্দর কর্মকর্তা তার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ধারনকৃত ভিডিও মুছে ফেলে। খবর পেয়ে স্থানীয় কয়েক সংবাদকর্মী লঞ্চঘাটে পৌছালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, উচ্ছেদ অভিযান করতে গেলে এরকম ঘটনা ঘটে। এতদিন কেন এ অভিযান হয়নি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটাও খতিয়ে দেখছি। আর সংবাদকর্মীর কাছ থেকে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট কেন করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই সাংবাদিকের ভিডিও করা ঠিক হয়নি তাছাড়া ভিডিও ডিলিট আমি করিনি, আমি একটু ব্যস্ত আছি পরে ফোন দেন। এরপর তাকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, এ ধরনের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেয়া দরকার কিন্তু তিনি এ ধরনের কোন অনুমতি নেননি এমনকি জেলা প্রশাসনের কোন পর্যায়ে অবগতও করেননি। বিষয়টি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নৌ বন্দরের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে
বার্তাবাজার/ আরএইচ