ভূমি কর্মকর্তার দাপট : সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ২ সাংবাদিকের ওপর হামলা

মোঃ মিজানুর রহমান এনামুল, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ ভূমি অফিসের অনিয়ম-দূর্ণীতির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার দুই সাংবাদিক। যাদের নেতৃত্বে এই হামলার ঘটনা ঘটে তারা হলেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) মনিরুজ্জামান ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সজল মাহমুদ। এসময় সাংবাদিকদের মোবাইল ও ক্যামেরা ভাংচুর করে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

এই হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন- রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ কামরুল হাসান রুবেল এবং প্রেস ক্লাবের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ইংরেজী দৈনিক এশিয়ান এইজ পত্রিকার রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রতিনিধি মু.জাবির হোসেন। পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা খবর পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে যান এবং অবরুদ্ধ দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করেন।

হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিক মোঃ কামরুল হাসান রুবেল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অনিয়ম-দূর্ণীতির মহাযজ্ঞ চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা মঙ্গলবার সকালে তথ্য সংগ্রহের জন্য সেখানে উপস্থিত হই। উপস্থিত হইয়া দেখি অফিস চলাকালীন সময় ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) মনিরুজ্জামান গায়ের সার্ট খুলে, লুঙ্গী পরে ও গলায় গামছা ঝুলিয়ে অফিস কক্ষে বসে কাজ করতেছেন। অফিসের মধ্যেই কয়েকজন ভুমি অফিসের চিহ্নিত দালাল বসে বিভিন্ন কাগজ পত্রের কাজ করছেন ও টাকা লেনদেন করছেন। ঐ অবস্থায় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে মনিরুজ্জামন আমাদের হাত থেকে প্রথমে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলে এবং পরে আমরা যাতে প্রশানকে অবহিত করতে না পরি সেই জন্য মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয় সার্ভেয়ার সজল মাহমুদ এবং আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে।

সাংবাদিক মু. জাবির হোসেন বলেন, ভূমি অফিসে অনিয়ম-দূর্নীতির ছবি তুলতে গেলে তহশিলদার মনিরুজ্জামান ও সার্ভেয়ার সজল মাহমুদ দালালদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। এসময় তারা আমাদের ক্যামেরা ভাংচুর করে এবং সাথে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে আমাদেরকে উদ্ধার করেন। এপর রাঙ্গাবালী উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের কাছে ভুলের শিকার করে ক্ষমা চাইতে থাকেন তহশিলদার ও সার্ভেয়ার।

রাঙ্গাবালী থানা অফিসার ইনচার্জ আলী আহম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

এঘটনায় পটুয়াখালী প্রেস ক্লাব ও রাঙ্গাবালী প্রেস ক্লাব তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সাংবাদিক নেতারা জরুরি বৈঠকে করে বলেন, অভিলম্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী দূর্নীতিবাজ তহশিলদার ও সার্ভেয়ারকে এই মুহুর্তে প্রত্যাহার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিকরা কঠিন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর