স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

শেখ আমিনুর হোসেন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের শিল্পী আক্তার তার স্বামীর অত্যাচার নির্যাতন, মামলা, হামলা ও হুমকী ধামকীর হাত থেকে রক্ষা পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার বিকালে বুধহাটা বাজারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

বুধহাটা গ্রামের মৃত খবির আলি সরদারের পুত্র দাউদ সরদার তার ১ম স্ত্রী অসুস্থ বলে একই গ্রামের লোকমান সরদারের কন্যা শিল্পী আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রাজি না হলে প্রতাপশালী দাউদ তাকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েও লাভ না হওয়ায় তার ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এনিয়ে থানায় জিআর- ১২৪/১১ মামলা রুজু করলে আসামী জামিন নিয়ে মামলা থেকে বাঁচতে তার সাথে আপোষ মিমাংসায় ১ম স্ত্রীকে স্বাক্ষী রেখে ৪ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য্যে ২৫/৭/১১ তাং রেজিস্ট্রী কাবিনে বিয়ে করলে বাদী মামলা নিস্পত্তি করে দেয়। কিছুদিন ঘর সংসার করার পর দাউদ তাকে তালাক দেয়। কিন্তু তাতে নিস্তার পায়নি, বরং পথেঘাটে বাজে কথা বলাসহ পিছু লেগে থাকে। থানায় জিডি করলে লিখিত অঙ্গীকারনামা দিয়ে নিস্কৃতি পায়। তবে তাকে হাতপা ধরে ভুল বুঝিয়ে ২৩/১/১২ তাং পুনরায় বিয়ে করে। এরপর যৌতুকের দাবীতে অন্তঃস্বত্তা স্ত্রীকে নির্যাতন করলে শিল্পী নারী ও শিশু ২৮৮/১২ নং মামলা করেন। মামলা চলাকালে স্বামীর ঔরষজাত পুত্র সন্তানের মা হন তিনি। মামলা চলাকালে আবার তিনি স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেন। তবে আবারও তিনি খোলস পাল্টে মামলা থেকে বাঁচতে ২১/৫/১৮ তারিখে দেড় লক্ষ টাকা দেনমোহরে তাকে রেজিস্ট্রী বিয়ে করলে শিল্পী মামলা তুলে নেয়। আসামী এবার ভিন্ন রূপ ধারণ করে শ্বাশুড়ির নিকট থেকে ৭৫ হাজার, তার নিকট থেকে ৩০ হাজার ও আশা সমিতি থেকে স্ত্রীর কাছ থেকে আরও ৭০ হাজার টাকা উঠিয়ে নেয়। এরপর থেকে আবার একই রূপ। দীর্ঘদিন কোন খোজখবর নেইনি। তাদের সন্তান ১০/২/১৯ তাং আগুনে পুড়ে গেলে তাকে জানালেও কর্ণপাত করেনি। বরং উল্টে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করতে থাকে। বাড়ির সামনে স্বামীকে পেয়ে তিনি বাড়িতে ডেকে নিয়ে বাচ্চার ঔষধ কিনে দিতে বললে গালিগালাজ করে আবার যৌতুকের টাকা দাবী করে।

এক পর্যায়ে মারপিট ও গলায় রশিদিয়ে স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ পাশের লোকজন সেখানে গিয়ে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। তিনি বিজ্ঞ আদালতে জিআর ৭২/১৯ (আশাঃ) মামলা রুজু করেন। আসামী জামিনে মুক্ত হয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগসহ ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। বাদীর মা গ্রাম আদালতে মামলা করলে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তার টাকা পরিশোধের রায় প্রদান করলে ২০ হাজার টাকা দিয়ে আর দেইনি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানীতে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা আদায়ের জন্য আবেদন করলে ইউএনও আশাশুনিকে দায়িত্ব প্রদান করেন। তিনি আরও বলেন, সুদ খোর দাউদ, মইদুলসহ তার ভায়েরা এলাকায় সুদের ব্যবসার নামে বহু মানুষকে সর্বশান্ত করেছে। করিম ঢালী, মন্টু, পলাশ, মইনদ্দীসহ অসংখ্য মানুষ সুদের ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছেন। দাউদ অরুন মার্ডার মামলা, বৈদ্যিকে জখম করা মামলা, ছিনতাইসহ অনেক মামলার আসামী। সে প্রতিবার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা দিয়ে বিয়ে ও মিমাংসা করলেও কথা রক্ষা করেনি। বরং তাকে নির্যাতন, হয়রানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে চলেছে। তিনি দু’টি সন্তান নিয়ে একা বসবাস করেন, তাকে যে ভাবে হুমকী ধামকী ও মামলা তুলে নিতে শাসাচ্ছে তাতে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন দাবী করে জেলা প্রশাসক, এসপি মহোদয় সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর