ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে মায়ের আকুতি

শেখ আমিনুর হোসেন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: ‘চোর ও নেশাখোর বলে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে বাড়ির কেউ তাকে দেখতে যায় না। আমি তো মা, তাই কোর্টে চালান দেওয়ার পর গারদে লুকিয়ে দেখা করে আসতাম মুকুলের সাথে। রবিবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদরের বাঁকাল ব্রীজের পাশে মুকুলকে আট রাখা অবস্থায় দরজার ফাঁক দিয়ে একবার দেখে এসেছিলাম। ভাবছিলাম প্রতিবারের মতো মারধর করে ছেড়ে দেবে রাতে। তাই বাড়ি এসে ওর জন্য ডিম ভাজছিলাম। সে ডিম আর খাওয়া হলো না মুকুলের।’
মঙ্গলবার বিকালে সাতক্ষীরা শহরতলীর বাঁকাল ইসলামপুর চরের বাড়িতে বসে এভাবেই আকুতি জানান নিহত মুকুলের মা সায়রা বানু।
তিনি বলেন, তাদের গ্রামের মুকুলের কতিপয় বন্ধু নেশার দ্রব্য কিনতে বেশ কিছু টাকা দেয়। নেশা দ্রব্য না পেয়ে মুকুলের উপর প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ছিলো তারা। তাদের মধ্যে দুই জন কয়েক বার বাড়িতে খুঁজতে এসেছে মুকুলকে। রবিবার সকালেও তারা দু’ বার আসে। বাড়ির পিছনের পথ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই মুকুলকে ধরে পাশ্ববর্তী এক দোকানে নিয়ে মারপিট করে তারা। সেখান থেকে কথিত এক অফিসে নিয়ে আটক রেখে মারপিট করা হয়। থানায় কর্মরত এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে মুকুলের মৃত্যুর খবর পেলে রসুলপুরর লাশকাটা ঘরে যেয়ে মুকুলকে দেখতে পান। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে ফেরৎ দেওয়া হয়।
সায়রা বানু বলেন, মুকুলের মুখে যে চেকের গামছা দিয়ে বাঁধা হয়ছিল সেটি রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুকুলের এক বন্ধুর কাছে দেখছিলেন। তবে অজ্ঞাত নামা দেখিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তিনি তার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চান। এ পরেও নিহতের পরিবার আইনি সহায়তা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আগামিতে মামলা করবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।
মুকুলর বাবা টনু মোল্লা জানান, সোমবার সকালে মুকুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি বাড়ি থেকে বড়বাজারের কর্মস্থলে যাননি। তার ছেলের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন পুলিশ, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের সহায়তা চেয়েছেন মুকুলের , মা, বাবা, ভাই শাহীন, মামুনসহ পরিবারের সদস্যরা।
সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মুকুলের বিরুদ্ধে থানায় ডজন খানেক মামলা ছিলো। তবে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন তদন্ত চলছে শেষ হলে আসল কারণ জানা যাবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর