যশোর জেলায় তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

ঘুর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সারা দেশব্যাপীর ন্যায় যশোর অঞ্চলও তাপপ্রবাহ স্বাভাবিক ছিলো।কিন্তু ফণির আবহাওয়া কেটে যাওয়ার পরপরই এ অঞ্চলে শুরু হয়েছে তীব্র তাপাদাহ।

যার কারণে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রায় বিপর্যস্ত দেখা গিয়েছে।পবিত্র মাহে রমজানে তীব্র তাপাদাহে ধর্মপ্রাণ মুসলমান রোজাদার ব্যক্তিরা বেকাদায় পড়েছে।সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্তের মধ্যে পড়েছে খেটে খাওয়া- শ্রমজীবী মানুষেরা।বৈশাখে এ তাপাদাহে দিনের বেলায় রাস্তা ঘাটে মানুষের চলাচল কম দেখা যাচ্ছে।জনসাধারণের দাবি,অতীতে গ্রীষ্মে এ রকম অতি তাপদাহ দেখা যায়নী।

আবহাওয়া অধিদপ্তরসূত্রে জানা গেছে,গত সোমবার থেকে দেশে তাপ প্রবাহ ক্রমশ বাড়ছে।বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রের্কড করা হয়েছে যশোরে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।(শুক্রবার ১০ই মে) যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।এমন তাপদাহ আরো সপ্তাহ খানেক থাকবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

এ দিকে তীব্র তাপদাহে সবচেয়ে বেশি কষ্ট ভোগছে কর্মজীবি মানুষ।তীব্র ভ্যাপসা গরমে জীবনযাপন অতিষ্ট করে তুলছে। যশোরের শার্শা উপজেলার কাগজ পুকুর গ্রামের কৃষক “বার্তা বাজার” নিউজকে বলেন,ঘূর্ণিঝড় ফণির কারণে এখনো বোরো ধান পুরোপুরিভাবে ঘরে তুলতে পারেনী।কিন্তু এই রোদে ও গরমে কাজ করতে পারছি না।হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।

যশোর বেনাপোল বাজারে এক ভ্যান চালকের সাথে কথা হয় তিনি বলেন,প্রথম রোজা থেকে তীব্র তাপদাহ ও প্রচন্ড গরম শুরু হয়েছে।এই গরমে রোজা রেখে ভ্যান চালানো কঠিন তাই প্রথম দিন কষ্ট করেও রোজাটা ছিলাম কিন্তু এই দুই দিনে গরমের তাপদাহে রোজা থাকতে পারিনি।অন্য দিকে তিব্র গরমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে শিশু-বয়স্কদের ডায়রিয়া,বসন্ত,গুটি বসন্ত,স্টোকসহ নানা রোগে রোগীরা ভর্তি হচ্ছে।

এ ছাড়া বর্হিবিভাগ থেকে প্রতিদিন ৪-৫শত রোগী গরমজনিত রোগে চিকিৎসা নিচ্ছে।হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এক মহিলা জানান,তীব্র গরমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছি দুই দিন ধরে।প্রচন্ড গরমে অনিয়ত্রণ মাত্রায় খাবার খেয়ে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।পবিত্র রমজান উপলক্ষে ইফতারে তৃষ্ণার্ত রোজাদাররা অনেকেই সন্ধ্যার পর ডাবের পানি,লেবুর সরবত ও তরমুজের মতো ফল খাচ্ছেন।শহরের মোড়ে মোড়ে আর ফুটপাতের খোলা জায়গায় সন্ধ্যার পর ঠান্ডা পানির লেবুর শরবতের অস্থায়ী দোকান বসছে।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা.আবুল কালাম আজাদ লিটু বলেন,সারা দেশের ন্যায় যশোর অঞ্চলেও তাপপ্রবাহ অনেক বেশি।তাছাড়া এখন রমজান মাস।এ গরমে রোজাদারদের কষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক।সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত অনাকারণে রোদের মধ্যে না যাওয়াটাই ভালো।গরমে শরীর থেকে ঘেমে লবণ পানি বের হয়ে থাকে।এজন্য ইফতারের পর শরীরকে শীতল রাখে এমন তরমুজ,শশা,পেঁপের মতো খাবার খেতে হবে।গরমে শরীর অসুস্থ্ হতে পারে এই জন্য খোলা খাবার খাওয়া উচিত না এবং শরীর ঠান্ডা রাখে এমন ঢিলে-ঢালা পোশাক পরিধান করা উচিত।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর