বয়সের ভাড়ে কনকনে শীতে ১১৮ বছর বয়সের আদিবাসী নারী লক্ষী হাজদা নুয়ে পড়েছে। উত্তরের জেলা দিনাজপুরে শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় ঘর থেকে বেশির ভাগ মানুষ বের হতে পারছে না।
বেশির ভাগ লোক তাদের শ্রম বিক্রি করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই কিনতে পারেননি শীত নিবারণের কম্বলটুকুও! মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাহমুদুল আলম শহরের মির্জাপুর এলাকার আদিবাসী (খ্রিস্ট্রান পাড়া) পল্লীতে গিয়ে ঘর থেকে বয়স্ক লোকদের ডেকে তুলে শীত নিবারণের জন্য কম্বল সহায়তা প্রদান করেন।
মির্জাপুর আদিবাসী পল্লীর ১১৮ বছরের নারী লক্ষী হাজদা কম্বল পেয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে মেয়ে কেউ নেই। অন্যের বাড়িতে থাকি। এই শীতে আমাদের কেউ খবরও করতে আসেনি। আজকে ডিসি স্যার আমাদের নিজেই কম্বল দিতে এসেছেন। আমাকে যখন ঘর থেকে ডেকে তুলেছেন তখন আমার খুব ভালো লেগেছে। আমাদের কথা তিনি মনে করেছেন এজন্য ডিসি স্যারকে ধন্যবাদ।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবার দিনাজপুর জেলায় ১ লাখ ২০ হাজার কম্বল বিভিন্ন উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। তার মধ্যে জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় জেলা প্রশাসক নিজেই রাতের আঁধারে শীত উপেক্ষা করে গরীব অসহায় বয়স্ক মানুষদের কম্বল বিতরণ করে বেড়াচ্ছেন। গত দুইদিনে জেলা প্রশাসক বিভিন্ন বয়স্ক মানুষের বাড়িতে গিয়ে প্রায় ৫০০ শতাধিক কম্বল বিতরণ করেছে বলে জানা গেছে।
কম্বল বিতরণের বিষয়ে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গরীব অসহায় বয়স্ক মানুষদের খুঁজে খুঁজে কম্বল বিতরণ করছি। আমাদের বিভিন্ন উপজেলায় ইউএনও’রা কাজ করছেন।
দিনাজপুরে এবার অনেক বেশি শীত পড়েছে। আমি অনেকের বাড়িতে গিয়ে অবাক হয়েছি। অনেক বয়স্ক মানুষের ঘরে শীত নিবারণের জন্য ভালো কাপড় নেই। নিজের হাতে এসব গরীব অসহায় বয়স্ক মানুষকে কম্বল দিতে পেরে আমাকেও ভালো লাগছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সবার দায়িত্ব এসব গরীব অসহায় বয়স্ক মানুষদের পাশে দাড়ানো। আমি সরকারি এবং বেসরকারিভাবেও জেলার এসব মানুষের জন্য শীতবস্ত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করছি সেই সাথে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি, যে যার জায়গা থেকে যতটুকু পারি বয়স্ক ও অসহায় মানুষদের পাশে দাড়াই।’
বার্তাবাজার/কেএ