মহিপুরে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটনে জড়িত মুখোশধারী এরা কারা?

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আলোচিত সেই অধ্যক্ষ কালিম উল্লাহ’র বিরুদ্ধে দায়েরকৃত চাঁদা দাবীর মামলার বাদী হাজী মো: আবদুস সালাম উদ্দীন’র বাড়ী দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটনের পর সোমবার রাতে তার লিখিত অভিযোগ এজাহার গন্যে রেকর্ড করেছে মহিপুর থানা পুলিশ। দুর্ধর্ষ এ ডাকাতি ঘটনার আলামত জব্দ করে লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে নেমেছে বলে জানিয়েছে মহিপুর থানা পুলিশ।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাত অনুমান ১টা থেকে ৩:১০ মিনিট পর্যন্ত মহিপুরের বিপিনপুর গ্রামে হাজী মো: আবদুস সালাম উদ্দীন’র বাড়ী দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। ১০/১২ সদস্যের অজ্ঞাত ডাকাত দল মাটির পিড়ায় সিঁধ কাটিয়া ছুরি, রামদাও, দোনালা কাটা বন্দুক, শাবল নিয়া ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। এরপর ঘরের বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালাইয়া ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা বাদীর স্ত্রীকে শাড়ীর ওড়না দিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে।

অজ্ঞাতনামা মুখোশধারী ৭/৮ জন ডাকাত বাদীর হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করলে তিনি খাটের উপর দাড়াইয়া পা দ্বারা ডাকাতদের ঝাপটা মারিলে ডাকাত সদস্যরা তার ডান পায়ে হাঁটুর নীচে নলায় ও বাম পায়ের হাঁটুর নীচে নলায় কোপ দিয়া গভীর রক্তাক্ত কাটা জখম করে । এসময় ২/৩ জন ডাকাত চাপাতির উল্টো পিঠ দিয়া তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।ভীতি প্রদর্শনের জন্য হাফ প্যান্ট পরিহিত একজন বারংবার কাটা বন্দুক উঁচিয়ে গুলি করার হুমকী দেয়। প্রচুর রক্তক্ষরনের কারনে তিনি দুর্বল হয়ে পড়ায় ডাকাতরা একসময় তাকে বেঁধে ফেলতে সক্ষম হয়।

এরপর ঘরের মধ্যে থাকা দুইটি ষ্টীল আলমিরা, একটি ওয়ারড্রোব, একটি শো-কেচ চাপাতি এবং শাবল দ্বারা ভাঙচুর করিয়া নগদ ৩ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা ও স্ত্রীর কানে থাকা স্বর্নের বালা, তার ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও চার্জার টর্চ লাইট নিয়া নেয়। ডাকাতি শেষে নি:শ্চিন্ত মনে ঘরে বসে নিজেদের মধ্যে ডাকাতি করা টাকা ভাগা-ভাগি কর নেয়। একজন উক্ত টাকার কিছু অংশ ঘরের বাহিরে থাকা লোকদেও দেয়।

ঘরের মধ্যে প্রবেশ করা মুখোশধারী ডাকাতদের বয়স অনুমান ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হবে এবং নেতৃত্বদানকারী ডাকাত সদস্যের বয়স একটু বেশী হতে পারে বলে বাদী তার মামলায় উল্লেখ করেছেন। ডাকাতির পর তরকারী, ভাত-রুটি নিজেদের মধ্যে ভাগা ভাগি করে খেয়ে নেয় তারা। মুখোশধারী ডাকাত সদস্যরা ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর স্থানীয়রা এবং মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘটনা পর্যবেক্ষন করে। এবং সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় বলে বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

মামলার শেষাংশে বাদী উল্লেখ করেন, মহিপুর বন্দরে তার ছেলের বন্দোবস্ত পাওয়া ভিটি নিয়া চাঁদা দাবীর অভিযোগে তিনি জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে গত ২৭ আগষ্ট সিআর-৭১০/২০১৯ মামলা আনয়ন করেন। এ মামলা প্রত্যাহারের জন্য ফেসবুক ও মৌখিক ভাবে তাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকী প্রদান করা হয়।

মহিপুর থানার ওসি মো: সোহেল আহম্মদ জানান, ডাকাতি সংঘটনের অভিযোগে মামলাটি থানায় এজাহার গন্যে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে এসআই এনায়েত কে নিযুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনার আলামত জব্দ করা হয়েছে। লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার ও অপরাধ সংঘটনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।

বার্তাবাজার/ডব্লিওএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর