প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণ: বিচার চেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ধর্ষিতার পরিবার

প্রতিবন্ধী কিশোরী (১৪) ধর্ষনের প্রতিবাদ করায় ধর্ষকের হুমকি-ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ধর্ষিতার পরিবার। এমনটাই অভিযোগ ওঠেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ীতে। এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি মহল স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা বলে সময়ক্ষেপন করছে।

এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোন কূলকিনারা মিলছেনা । বরং ধর্ষক বাবলু ও তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। তাদের অত্যাচারে ওই পরিবারটি বাড়ী ছাড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এতে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ঘটনাটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শুরু হয়েছে ধর্ষকের দৌড়ঝাপ। মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে ওই এলাকায় শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। চায়ের দোকানে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কিন্তু ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলছে না।

অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন বাবলু খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক সেনা সদস্য।

ধর্ষিতার মা আসমা বেগম বলেন,আমার প্রতিবন্ধী শিশুর সাথে ধর্ষণের ঘটনা শুনার পর থেকে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। ওই সময় স্থানীয় মাতবর রহিম মেম্বার, আব্দুল, দুলাল, আব্দুস ছালাম,লাল চাঁদ আমার উপর চাপ সৃষ্টি করে ঘটনাটি আপোষ করার জন্য। আমাকে মামলা করতেও দেয়নি। পরে বিষয়টি সাংবাদিকরা শুনে রিপোর্ট করার পর থেকে আবারো অত্যাচার শুরু করেছে। এখন আমি বাড়ীতেও থাকতে পারব কিনা ? আমি গরিব মানুষ,বাসা বাড়ীতে কাজ করে খাই এই মেয়ের এখন কি হবে। আমি আমার মেয়ের ধর্ষকের বিচার চাই।

জানা যায় গত দুই মাস পূর্বে সদর উপজেলা খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শুকুর আলীর ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া প্রতিবন্ধী কিশোরী সন্ধার দিকে দোকানে বিস্কুট কিনতে যায়। পাশেই দাড়িয়ে থাকা বাবলু মেয়েটিকে ফুসলিয়ে তার বাড়ীতে নিয়ে ধর্ষন করে। এবং মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। কিছু দিন পর মেয়েটি আশপাশের লোকজনকে বললে শুরু হয় নানা গুঞ্জন।

কিন্তু বাবলু ৪ প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে পারেনি। ঘটনাটি জানাজানি হলে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শুরু হয় শিশুর পিতা-মাতার ওপর বিভিন্ন ধরনের চাপসহ হুমকি। পরে সাংবাদিকদের দেখে সবাই মুখ খুলতে শুরু করেন। এখন ঘটনার সত্যতা এক এক করে বেড়িয়ে আসছে।

স্থানীয় ওয়ার্ড আ’লীগের সহ-সভাপতি হেলাল শেখ বলেন,ঘটনাটি শুনেছি। ওই মেয়ে ও তার মা আমার কাছেও এসেছিল। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছি। আমিও প্রতিবন্ধী ধর্ষনের সুবিচার চাই। তবে এলাকার প্রধানরা বিচার শালিশ করে এটা মিমাংশা করে দিবে বলে তিনি জানান।

এদিকে অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন বাবলু হুমকি-ধামকি ও ধর্ষনের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই মেয়েটি নাতনী হিসাবে আদর সোহাগ করি। এবং প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে মাঝে মাঝে দোকান থেকে এটা ওটা কিনেও দেই। কিন্তু তাকে আমি ধর্ষন করিনি। এটা নিয়ে আমার সাথে শত্রুতা করা হচ্ছে বলে জানান।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাউদ জানান, খোকশাবাড়ী ইউনিয়নে ধর্ষনের ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বার্তাবাজার/এম.কে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর