আবেদন ছাড়াই বশেফমুবিপ্রবি’র প্রভাষক ও সেকশন অফিসার বিদেশে ভ্রমণ

জামালপুরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) বাংলাদেশ স্টাডিজ বিষয়ের প্রভাষক ইলিয়াস উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী আফসানা আক্তার সেকশন অফিসার ছুটি না নিয়েই বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগ উঠেছে।

প্রভাষক ইলিয়াস উদ্দিন ও তার স্ত্রী বর্তমানে ভারতের চেন্নাই অবস্থান করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার তাঁদের ছুটি নেওয়ার কোন আবেদনপত্র পাইনি এবং ছুটি নেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান ইলিয়াস উদ্দিন ওরফে সানি। তার স্ত্রী আফসানা আক্তার তিনি ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ সালে সেকশন অফিসার হিসেবে (অস্থায়ী) নিয়োগ পান। ইলিয়াস উদ্দিনের বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায়। তিনি জামালপুরে থাকেন না, ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি ও তাঁর স্ত্রী থাকেন।

ইলিয়াস উদ্দিনের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি ‘ Elias Suny’ থেকে গত (৭ মে) শনিবার ভারতের চেন্নাইয়ের একটি মনোমুগ্ধকর জায়গায় তিনি ও তার স্ত্রীর একটি ছবি আপলোড করেন। সেই ছবি আপলোডের ক্যাপশনে তিনি লেখেন,”দাদাদের দেশে”। সেই ছবির মন্তব্যের ঘরে সাজ্জাদ হোসাইন রনি নামে একটা আইডি থেকে মন্তব্য করেন,”কলকাতায়” পরে ইলিয়াস সানি পাল্টা মন্তব্যে বলেন,”চেন্নাই”। সেলিম রেজা নামে একজন মন্তব্য করেন,”কবে গেলি” সেই পাল্টা মন্তব্যে তিনি বলেন,”আজ সকালে”।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলিয়াস উদ্দিনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি কিছু দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। তার স্ত্রী আফসানা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকায় প্ল্যানিং অফিসে নিয়মিত থাকার কথা থাকলেও তিনি নিয়মিত থাকেন না। অফিস না করেই তাঁরা নিয়মিত বেতন নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘ইলিয়াস উদ্দিন বাংলাদেশ স্টাডিজ বিষয়ের প্রভাষক ইলিয়াস উদ্দিন তিনি নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয় থাকেন না এবং ক্লাসও নেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান থাকলে তাকে শুধু দেখা যায়। তিনি রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকেন।

নামে প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘ইলিয়াসকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কখনোই আমরা সেই ভাবে দেখিনি। মাঝে মধ্যে হঠাৎ দুই একটি ক্লাস নিয়ে চলে গেছেন। তিনি ঢাকাতেই থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় বড় কোন প্রোগ্রাম হলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং প্রোগ্রাম করে আবার চলে যান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার সৈয়দ ফারুক হোসেন বলেন, ‘তাদের ছুটি’র কোনো আবেদনপত্র আমার কাছে আসেনি। এই বিষয়ে আমি কিছু জানিও না।

এ প্রসঙ্গে প্রভাষক ইলিয়াস উদ্দিন ওরফে সানি বলেন, আমার স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তাকে দ্রুত চিকিৎসার ভারতের চেন্নাই চলে আসছি। আসার আগে ঢাকায় ছুটির আবেদন দিয়ে আসছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুল আলম খানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বার্তা বাজার/জে আই

 

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর