অপকর্মের শেষ নেই উত্তরার কৃষকলীগ নেতা রাসেলের

মো : রাসেল মন্ডল। রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। শূণ্য হাতে ঢাকায় আসে রাসেল। এখন কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তিনি বর্তমানে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। সব ধরনের অপকর্মের জন্য তাকে উত্তরাবাসীর কাছে পরিচিতি করে তুলেছে বিষফোড়া হিসেবে। ফুটপাতে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।

এছাড়াও অভিযোগ আছে, গত ১০বছর যাবত নিজ আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে এবং কেউ চাঁদা না দিলে হামলা-মামলা, অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় করে আসছে তাদের থেকে। অভিযুক্ত এই রাসেল প্রায় ২০বছর আগে শেরপুর থেকে শূণ্য হাতে পাড়ি জমান বৃহত্তর উত্তরায়। ৯৮ সালের দিকে ঢাকায় এসে প্রথমে আজমপুর রাজউক মার্কেটের পাশের একটা চা দোকানে চাকরি করতেন। পরে কিছু টাকা জমিয়ে উত্তরা ফুটওভার ব্রীজের নিচে টিশার্ট বিক্রি শুরু করেন। সেই ব্যবসায় কোন মতে দিন চলছিল তার। ২০০৯সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঘুড়ে যায় রাসেলের ভাগ্যের চাকা।

দায়িত্ব পান ফুটপাত থেকে চাঁদা আদায়ের। তারপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। থানা পুলিশের নামে প্রতিদিন উঠাতে থাকেন চাঁদা। এড়িয়া ছোট থাকলেও বর্তমানে তার চাঁদাবাজি উত্তরা পশ্চিম থানা জুড়ে। চাঁদা তুলতে নিয়োগ দিয়েছেন
অন্তত ৬ জন লাইনম্যান। দোকান অনুপাতে থানা পুলিশের নামেও দৈনিক ২০থেকে ২শত টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলেন। রাসেলের কথার অবাধ্য হলে হকারদের ওপর নেমে আসে নানাবিধ হয়রানি অত্যাচার। এমনকি দেন মামলাও।

বর্তমানে উত্তরার বিভিন্ন ফুটপাতে রাসেলের রয়েছে ডজন খানেক দোকান ও কর্মচারী। উত্তরার রাজউক কর্মচারী কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সে রয়েছে বিশাল শো-রুম। জামতলা এলাকায় রয়েছে কোটি টাকার ফ্ল্যাট, গাজীপুরে ১০ কাঠা জমি, চলাচলের জন্য দামি গাড়িসহ গ্রামের বাড়িতেও নামে-বেনামে করেছেন সম্পদ ।

বিত্তবান হওয়ার সাথে সাথে অধঃপতন হয়েছে তার চরিত্রের। দীর্ঘদিনের পরিচিত তার এক মামার স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন রাসেল । নিজ স্ত্রী থাকা সত্বেও মামীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করার দায়ে প্রথম স্ত্রীর করা মামলায় জেলও খেটে ছিলেন রাসেল। তার বিরুদ্ধে মুখ খোলায় ডিবি পরিচয়ে তুলে এনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপনও আদায় করেন আজাদ নামের এক ব্যক্তির নিকট থেকে। এখানেই ক্ষ্যন্ত হননি রাসেল! মিথ্যা মামলা দিয়ে আজাদকে জেলে পাঠিয়ে দখল করে নেয় আজাদের লাইন ও দোকানপাট। এসব তথ্য জানান ভুক্তভুগী আজাদ।

অন্যদিকে অদৃশ্য ক্ষমতার বলে অভিযুক্ত রাসেল সুকৌশলে নিজের নামের মামলায় ফাঁসিয়েছেন রাসেল নামের আরেক হকার ব্যবসায়ীকে।

তবে অভিযুক্ত রাসেল মন্ডল সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। আমি ১বছর আগে লাইনম্যান ছিলাম। এখন আর এই লাইন চালাই না। নিজের ব্যবসায় সময় দেই।

রাসেলের চাঁদাবাজির বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদ আলম বার্তা বাজারকে জানান, তিনি এ থানায় নতুন আসায় রাসেল মন্ডলের বিষয় তেমন কোনো তথ্য জানেন না।

তবে কোনো অভিযোগ আসলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান।

অভিযুক্ত কৃষকলীগ নেতা রাসেলের অত্যাচার থেকে মুক্তি চেয়ে বিচারের দাবি জানান উত্তরাবাসী।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর