ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ভূমি বিরোধের জের ধরে প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের ভয়ে নিরীহ এক পরিবারের সদস্যদের ভিটে ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। প্রাণভয়ে বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারটি।
ভুক্তভোগী পরিবারটি হচ্ছে উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের মালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মাইক্রো চালক মো. গাউস আহমেদ মোল্যার পরিবার। ওই একই এলাকার জাহিদ শেখ ও আলী শেখের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নিরীহ পরিবারটিকে ভিটে ছাড়া করার এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গাউস আহমেদ মোল্যা চারজনের নাম উল্লেখপূর্বক থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ফিরে এসে সুখে-শান্তিতে বসবাস করার জন্য প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাউস আহমেদ দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে তার নানার ওই বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। গাউস আহমেদের আপন কোন মামাতো ভাই নেই। তাই এই সুযোগে তার চাচাতো মামা আলী শেখ ও চাচাতো মামাতো ভাই জাহিদ শেখের পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে তার নানার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করার পায়তারা করতে থাকে। সর্বশেষ গত ৬ মে দুপুরে তার চাচাতো মামাতো ভাই রকিব শেখ জোরপূর্বক জমি দখলে নিয়ে মনগড়া সীমানা দেওয়ার জন্য গাউস আহমেদের জমিতে পিলার স্থাপন করে। এসময় গাউস আহমেদ, তার দুই ছেলে ইমরান মোল্যা ও তামিম মোল্যা বাঁধা দেয়। পরে আলী শেখ, জাহিদ শেখ, রকিব শেখ, রফিক শেখসহ আরও কয়েকজন গাউস শেখ ও তার ছেলেদের এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারে। এসময় অভিযুক্ত রকিব শেখের ছোঁড়া ইটের আঘাতে গাউস শেখের ডান চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এরপর অভিযুক্তরা গাউস শেখ, তার দুই ছেলে ও ছেলেদের স্ত্রীদের জোরপূর্বক এক কাপড়ে ঘর থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে তারা সবাই অন্যত্র বসবাস করছেন।
আজ শনিবার সকালে ভুক্তভোগী গাউস শেখ মুঠোফোনে জানান, ‘আজ সাতদিন হলো আমরা আমাদের বাড়ি ছাড়া। গতকাল (শুক্রবার) রাতেও আমার চাচাতো মামা ও চাচাতো মামাতো ভাই মিটিং করেছে। আমাদের তারা বাড়ি যেতে দিবে না। বাড়ি গেলেই আমাদের আবার মারধর করবে।’
অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে সরেজমিনে তাদের বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে বাড়িতে থাকা অভিযুক্ত রকিব শেখের স্ত্রী জানান, ‘আমরা তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়নি। তারা আমাদের একজনকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এখন সেই ভয়ে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।’
আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক বিনয় বাড়ৈ বার্তা বাজার’কে জানান, ‘এই ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উভয়পক্ষের লিখিত অভিযোগের তদন্তভার পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বার্তা বাজার/জে আই