পিটিআই প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ

নওগাঁয় প্রাইমারি টির্চাস ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের (পিটিআই) প্রশিক্ষক সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে এক শিক্ষিকাকে মানষিক নিপীড়ন ও প্রশাসনিক ভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ওই প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তার নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অবশেষে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা অনামিকা মন্ডল ঘটনাটি পিটিআই সুপারিনটেনডেন্টকে লিখিত অভিযোগ দেন। গত ২০১৩ সাল থেকে সালাহ উদ্দিন পিটিআইতে প্রশিক্ষক হিসেবে আছেন। তার গ্রামের বাড়ি নাটোরের সদর উপজেলায় বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা অনামিকা মন্ডলের বাড়ি নওগাঁ শহরের পোষ্ট অফিস পাড়ায়। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার হালঘোষ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিরত আছেন। এ ঘটনায় নওগাঁয় প্রাইমারি টির্চাস ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের (পিটিআই) এর প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে আতৎক বিরাজ করছে। এ বিষয়ে ভূক্তভোগি প্রশিক্ষণার্থীর প্রাইমারি টির্চাস ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের (পিটিআই) এর সুপারিনটেনডেন্ট রবীন্দ্রনাথ প্রামাণিকে ঘটনার কথা মৌখিক ভাবে অভিযোগ করার পরেও তিনি কোন ব্যাবস্থা নেয়নি এমনকি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরেও ওই লম্পটের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা না নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে অন্যত্র বদলীর জন্য সুপারিশ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষিকা অনামিকা মন্ডল নওগাঁ পিটিআই এ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের একজন প্রশিক্ষণার্থী। কম্পিউটার সায়েন্সের প্রশিক্ষক সালাহ উদ্দিনের সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের প্রস্তাবনা সালাহ উদ্দিনের দিক থেকে আসে কিন্তু তিনি নিজ সুবিধার্থে তার সাথে সব রকম যোগযোগ বন্ধ করে দেন। যা স্বাভাবিক ভাবেই ছিল মানসিক পীড়াদায়ক।

এই ভূল সম্পর্ক বাদ দিয়ে স্বাভাবিক সর্ম্পক রাখার জন্য ওই প্রশিক্ষণার্থী এসে সালাহ উদ্দিনকে অনুরোধ করেন কিন্তু সালাহ উদ্দিন স্বাভাবিক যোগাযোগ রাখতে অস্বীকার করেন এবং তার পারিবারিক অসুবিধা আছে বলে জানান। এক পর্যায়ে সালাহ উদ্দিন তার এক পুলিশ বন্ধু নওগাঁ সদর থানার এস আই মো: খায়রুলকে বললে ওই এস আই গত ১২ জুন তারিখে ভূক্তভোগি শিক্ষিকাকে ভয় দেখায়। এর পরদিন আবার সদর উপজেলার শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন অপর এক শিক্ষককে সাথে নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে শাসিয়ে আসে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া নওগাঁ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাইয়ার সুলতানা তাকে অশালীন ভাষায় তার ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিয়ে শো কজ নোটিশ দেওয়ার হুমকি দেন।

এ ব্যাপারে সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো: খায়রুল বলেন, দীর্ঘদিন থেকে অনামিকা নামে এক মেয়ের সঙ্গে সালাহ উদ্দিনের প্রেমের সর্ম্পক চলছিল। সাংসারিক চাপেরমুখে সালাহ উদ্দিন অনামিকার কাছ থেকে সটকে পড়ার জন্য থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনামিকাকে কল দিয়ে বলি, যেন সালাহ উদ্দিনকে আর বিরক্ত না করে। কারণ তার স্ত্রী সংসার আছে।
নওগাঁয় প্রাইমারি টির্চাস ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (পিটিআই) প্রশিক্ষক সালাহ উদ্দিন বলেন, এটা একটা ভুল বুঝাবুঝি। পরে সমাধান হয়ে গেছে।

এবাপারে ভূকভোগী শিক্ষিকা অনামিকা মন্ডলের সেল ফোনে একাদিকবার কল দিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এই প্রতিবেদন সংগ্রহের সময় নওগাঁ সদর মডেল থানায় এস আই মো: খায়রুলের নিকট গেলে তিনি তার বন্ধু সালাহ উদ্দিনকে থানায় ডেকে নিয়ে ৫ হাজার টাকা নগদ দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

নওগাঁ পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট রবীন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর দু’পক্ষকে ডেকে পাঠানো হলে তারা একক ভাবে এসেছিলে। তাদেরকে অভিভাবক সহ আসতে বলা হয়। পরবর্তীতে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে আসলে পারিবারিক ভাবে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। সালাহ উদ্দিনকে বদলীর সুপারিশ করা হয়েছে। তার চাকরি প্রকল্পের অধীনে হওয়ায় বদলী হতে দেরী হচ্ছে।
এ বিষয়ে নওগাঁ পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন পিপিএম কে অবগত করলে এবং অভিযোগ পত্রটি তার হাতে দিলে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর