দেবীদ্বার আ.লীগের কমিটিতে আত্মীয়করণ ও পারিবারিক কমিটির ৬৬ নেতার তালিকা প্রকাশ

দেবীদ্বার আওয়ামী লীগে ৬৬ জন নিস্কীয় ও অযোগ্য ব্যক্তি রয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে পৌর কমিশনার মুজিবুর রহমানের বাড়িতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে থাকা আত্মীয়করণ ও পারিবারিক হিসেবে ১৫জন, ঢাকা প্রবাসী ৪৫ জন ও কুমিল্লা শহর প্রবাসী ৬জনসহ ৬৬ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করেন তারা।

আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত নাখোশ নেতাকর্মীরা তালিকায় থাকা নেতাকর্মীদের কমিটি থেকে বাদ দিয়ে যোগ্যদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের বড় ভাই এডভোকেট আবুল হোসেন বর্তমান পূর্ণাঙ্ড় কমিটির উপদেষ্টা সদস্য খুনী মোস্তাকের এনডিপির সদস্য থাকার প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেবীদ্বার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কমিশনার মুজিবুর রহমান বলেন, `কমিটির বিষয়ে আমরা সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। তবে আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ঘোষিত কমিটি থেকে নিস্ক্রীয় ও অযোগ্যদের সরিয়ে যোগ্যদের স্থান করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে কুমিল্লা উত্তর জজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মম. রুহুল আমীন গত ২৬ জানুয়ারী ওই পূর্ণাঙ্গ কমিটির সকল কার্য্যক্রম স্থগিত করেন এবং সাতদিনের মধ্যে সবাইর সাথে সমন্বয় করে পূর্নাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ করাকেই আমাদের প্রতিবাদ আন্দোলন যে যৌক্তিক তা-ই প্রমাণ করেছেন। আমাকে যদি কমিটিতে না রাখা হয়, তাহলে এতে কোনও দুঃখ নেই। তবে বিতর্কিত ও অযোগ্যরা যখন কমিটিতে প্রবেশ করবে তখন তারা সংগঠনকে বিতর্কিত করবে।’

তিনি আরও বলেন, `পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কমিশনার মুজিব বলেছেন, হুমকি দেয়া হয় যারা কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু আমরা তাদের কাছে বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাই, বিগত দিনে যারা আমাদের ওপর হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? আমরা সংবাদ সম্মেলন করে প্রমাণ করেছি আমাদের আন্দোলন যৌক্তিক ছিল। যে কারণে ইতোমধ্যে কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী তাদের শেষ আশ্রয়স্থল মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনার কাছে আমরা অনুরোধ জানাবো, সংস্কার করার পরে যেন কমিটিতে আর বিতর্কিত ও অযোগ্য কেউ স্থান না পায়। পরে যে কমিটি পূনর্গঠন করা হবে, তা যেন বানরের রুটি ভাগ করার মতো না হয়। আওয়ামী লীগের ত্যাগীরা বঞ্চিত হবে, এই মতাদর্শে আমরা বিশ্বাস করতে চাই না।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কেএম কামরুজ্জামান মাসুদ, দেবীদ্বার এসএ সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ মাহবুবুর রহমান মুন্সী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ কবিরুল ইসলাম সরকার, সাবেক সহ সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসেন, পৌর আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক কাজী মনিরুল ইসলাম, এডভোকেট ইয়াকুব উল্লাহ তুষার, মোঃ জাকির হোসেন প্রমুখ।

আওয়ালীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আত্মীয়করণ ও পারিবারিক কমিটির নিস্ক্রীয় ৬৬ অন্যতম নেতা যারা দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম সফিউদ্দিন শফি, মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুস ছালাম ও সদস্য গাজী রাসেল বিন ছালাম এরা সম্পর্কে একে অপরের মামা ভাগ্নে ও পিতাপুত্র।

সদস্য রৌশণ আলী মাস্টার, হুমায়ুন কবির, ফরিদুল আলম ধনু, আইয়ুব আলী মাস্টার ও উপদেষ্টা সদস্য এডভোকেট আবুল হোসেন এরা সম্পর্কে চাচাতো জেঠাতো ভাই।

সহসভাপতি মো. মফিজুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. ছালাহ উদ্দিন ও সদস্য আবদুল আলীম এরা সম্পর্কে একে অপরের মামা ভাগ্নে।

সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইখতেখার আলম তুষার, সহপ্রচার সম্পাদক মোরশেদ আলম, উপদেষ্টা সদস্য মনিরুজ্জামান রিপন ও সেলিম খান এরা সম্পর্কে মামা ও ভাগ্নে ও চাতাতো ভাই।

এ ব্যাপারে কুমিল্লা উত্তর জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব রোশন আলী মাস্টার বলেন, কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে সবাই দলের ত্যাগী এবং স্বচ্ছ। নির্বাচন আসলে দিনে নৌকা-রাতে ধানের শীষ মার্কা এবং মাদকাসক্ত লোকদের কমিটিতে রাখা হয়নি।

বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর