বন্যায় ভাসছে সাড়ে ৭ লাখ মানুষ, মিলছে না ত্রাণ সহায়তা

সৃষ্টিকর্তা ছাড়া দেখার কেউ নেই। এ আক্ষেপ কুড়িগ্রাম জেলার ৯ উপজেলার বানভাসী মানুষের। গত ৫ দিন ধরে কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী মহাসড়কে ধরলা সেতুর পুর্বপাড়ে প্লাস্টিক শিট দিয়ে তাবু বানিয়ে বসবাস করছেন সদর উপজেলার পাঁচগাছী কদমতলা গ্রামের কয়েকশ পরিবার।

ঘর-বাড়ি বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সড়কের পাশে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। কিন্তু এই ৫ দিনে সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্যই মেলেনি তাদের।

এমন বসবাসের দৃশ্য চোখে পড়বে কুড়িগ্রাম জেলার ৯ উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে। যেখানেই উঁচু বাঁধ বা পাকা সড়ক রয়েছে সেখানেই কোনোমতে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিচ্ছেন আশপাশের মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমর, ফুলকমরসহ ১৬টি নদ-নদী প্রবাহিত। প্রধান নদ-নদীর মধ্যে শুধু তিস্তার পানি কিছুটা হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমরসহ বাকী নদ-নদীর অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোর পানির নীচে থাকায় এসব এলাকার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এখনও ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১২৩ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানিবন্দি জীবনে মিলছে না ত্রাণ সহায়তা
অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলার ৫৬টি ইউনিয়নের প্রায় ২ লাখ পরিবারের সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দী জীবন-যাপন করছে।

এ অবস্থায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় বন্যা দুর্গত মানুষেরা শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে না খেয়ে অবর্ণনীয় কষ্টে দিন পার করছে। গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দেয়ায় নিজেদের খাদ্যের পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসি মানুষজন।

পানিবন্দী মানুষের জন্য এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫০০ মেট্রিক টন টাল ও ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৪শ ৫০টি তাবু বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

তবে বন্যা দুর্গত মানুষের দুর্ভোগে বেসরকারিভাবে বা ব্যক্তি উদ্যোগে সামান্য পরিসরে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়েছে।

এদিকে, কুড়িগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো: হাফিজুর রহমান জানান, নতুন করে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তা বন্যা কবলিত মানুষদের মাঝে দ্রুত বিতরণ করা হবে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর