অর্থের অভাবে নিভে যাচ্ছে সাদিয়ার জীবন প্রদীপ

আট বছর বয়সী সাদিয়া আক্তার। রাত পোহালেই অপেক্ষায় থাকেন কখন স্কুলে যাওয়ার সময় হবে।লক্ষ্য, শ্রেণিকক্ষের প্রথম টেবিলে বসার। আর এ জন্য তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই পেটে কিছু পড়ত না অত্যন্ত মেধাবী এ ছাত্রীর। এর জন্য মা-বাবার কাছে বকুকিও শুনতে হতো প্রায় তাকে।

সাদিয়ার চঞ্চলতায় মুগ্ধ হয়ে পাড়া-প্রতিবেশীরাও তাকে খুব আদর করতেন। কিন্তু সেই মেয়েটির জন্য এখন সবার চোখে অশ্রু! কারণ গ্ল্যান্ড (গলায়) ক্যান্সারে আক্রান্ত সাদিয়া!

মেয়েকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন দরিদ্র বাবা-মা। কিন্তু এমন বাঁচা-মরার সংগ্রামে বড় বাধা গয়ে দাঁড়িয়েছে সাদিয়ার বাবার অভাব। একমাত্র মেয়ের এমন করুণ অবস্থা দেখে ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের আনকুটিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের হোটেল শ্রমিক রিয়াজ উদ্দিন ও গৃহবধূ বিথী আক্তার দম্পতির একমাত্র মেয়ে সাদিয়া। সে আনকুটিয়া নঈম উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

জানা যায়, কয়েক মাস আগেও হই-হুল্লোড়ে স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে সহপাঠীদের মাতিয়ে রাখত। কিন্তু হঠাৎ এমন রোগের কথা শুনে কাঁদছেন সহপাঠী, শিক্ষক থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা।

স্কুলে যাওয়া বা খেলাধুলার বদলে যন্ত্রণায় কাতর সাদিয়ার বেশিরভাগ সময় কাটছে হাসপাতালের বিছানায়। হাসিমাখা মুখখানি মলিন হয়ে গেছে। এখন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে শিশুটি।

অর্থাভাবে থেমে যেতে বসেছে সাদিয়ার জীবন। বর্তমানে শিশুটি বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসক মোহাম্মদ তৌফিকের তত্ত্বাবধায়নে রয়েছে।

সাদিয়ার বাবা রিয়াজ উদ্দিন জানান, শুরুর দিকে জ্বর হতো সাদিয়ার। দুই পাশের গলা ফুলে যেত। নাক দিয়ে রক্ত ঝরত। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর সেরে উঠত।

এভাবে চলে প্রায় চার বছর। প্রায় তিন মাস আগে হঠাৎ করেই আবারও অসুস্থ হলে সাদিয়াকে ঢাকায় ‘বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেড’-এ নিয়ে যান। সেখানে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গ্ল্যান্ড (গলায়) ক্যান্সার ধরা পড়ে সাদিয়ার। মেয়ের এমন রোগের কথা শুনে ভেঙে পড়েন বাবা-মা। চিকিৎসক কোমো দেয়ার কথা বললে অর্থাভাবে সাদিয়াকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন তারা।

এর পর আবারও সে গুরুতর অসুস্থ হলে পুনরায় ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হলে শিশুটিকে ভর্তি করা হয় আইসিইউতে। এর পর কিছুটা সুস্থ হলে পর পর তিনটি কেমো দেয়া হয়।

এদিকে সাদিয়ার পুরোপুরি সুস্থ হতে প্রয়োজন আরও প্রায় ১৫ লাখ টাকা- এমনটিই জানিয়েছেন চিকিৎসক। একজন হোটেল শ্রমিক বাবার পক্ষে যা জোগাড় করা কোনোমতেই সম্ভব নয়। চিকিৎসার খরচ জোগাতে সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তশালী ব্যক্তিদের সহায়তা চেয়েছেন শিশুটির পরিবার।

সাদিয়ার চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করতে চাইলে তার বাবা রিয়াজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে- ০১৩১০৯০৫৩৩৩ (বিকাশ পার্সোনাল)।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর