মাকে মেরে হাসপাতালে পাঠায় ছেলে

মা বাড়িতে থাকার কারণে তার ঘরের দখল নেয়া যাচ্ছিল না। তাই বৃদ্ধা মাকে মেরে গুরুতর আহত করে হাসপাতালেই পাঠিয়ে দিয়েছে সন্তান। এমন বর্বর নির্যাতনের ঘটনাই ঘটেছে পঞ্চগড়ের কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের গলেহা ফুলপাড়া এলাকায়। গতকাল শনিবার দুপুরে বৃদ্ধা মা হাফেজা খাতুনকে মেরে হাসপাতালে পাঠায় ছেলে ফারুক।

হাফেজা খাতুনের প্রতিবেশীরা জানান, ফারুক আর তার স্ত্রী ইনসানা বেগম দীর্ঘদিন ধরেই তাদের ঘরটা আরেকটু বড় করতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু পাশেই ছিল মায়ের ঝুপড়ি ঘর। এই ঝুপড়ির জন্যই দিনের পর দিন মাকে অত্যাচার করে গেছেন তারা। মায়ের বদনার পানিতে মরিচের গুড়া মেশানো, টয়লেটে যাওয়ার রাস্তায় আবর্জনা জমা করে রাখা, ঝুপড়ির একাংশ ভেঙে দেওয়াসহ এমন কোনো কাজ নেই যা তারা করেনি।

হাফেজা খাতুনের স্বামী সালাউদ্দিন মারা গেছেন ১১/১২ বছর আগে। ছেলেমেয়ে ১০ জন। পাঁচ ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। মেয়েদের সবাইকে বিয়ে দিয়েছেন। বড় দুই ছেলে পঞ্চগড় শহরে বাড়ি করে থাকেন। বাকি তিন ছেলে বাবার ভিটেতেই আছে। বাড়িতে থাকা তিন ছেলের মধ্যে রয়েছেন নুরু মিয়া, শফিউল্লাহ ও ফারুক। যে যার আলাদা ঘর করে সংসার পেতেছে। ছোট ছেলে ফারুকের ঘর ঘেঁষে একটি বেড়া চাটাই দিয়ে তৈরি ঝুপড়িতে তিনি থাকেন। খাওয়া-দাওয়া করেন আরেক ছেলের বাড়িতে। স্বামীর ভিটে ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে রাজি নন তিনি। কিন্তু ছোটো ছেলে ফারুক সেই চেষ্টাই চালিয়ে আসছিল।

প্রতিবেশীরা জানান, শনিবার দুপুরে টয়লেটে যাওয়ার রাস্তায় আবর্জনা জড়ো করে রাখে ফারুকের স্ত্রী ইনসানা। বৃদ্ধা হাফিজা সেই আবর্জনা একটু সরিয়ে টয়লেটে যাওয়ার সময় ইনসানা তার হাত থেকে পানি ভর্তি বদনা নিয়ে ভেঙে ফেলে। পরে ছেলে ফারুক মাকে গালাগালি করতে থাকে। মাকে টয়লেটেও যেতে দেয়নি সে। এর প্রতিবাদ করলে ফারুক আর তার স্ত্রী ইনসানা মিলে বৃদ্ধাকে মারধর করতে থাকে। এ সময় তার চিৎকারে অপর ছেলে শফিউল্লাহ এসে তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে বৃদ্ধা মা পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মায়ের ভিটে দখল করতে সন্তানের এমন বর্বরতার কথা শুনে আঁতকে উঠছেন সবাই। বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করছেন অনেকে। পাশাপাশি সবাই এটাও বলছেন যে, এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত। অন্যথায় নিজের মায়ের সঙ্গে নৃশংসতার এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর