সরকারি সহায়তা পাওয়ার পর ও মাছ শিকার বন্ধে রাজি নয় জেলেরা

ইকবাল হোসেন জীবন, মিরসরাই প্রতিনিধি: মাসে ৪০ কেজি হারে সহায়তার চাল নিয়েও মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে নারাজ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জেলারা। তারা সরকারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রবিবার (৯ জুন) মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে। এ নিয়ে তারা আন্দোলনে নামার প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে।

জানা গেছে, মাছের প্রজনন রক্ষায় বছরে অন্তত দুই মাস সাগরে জাল ফেলে মাছ ধরার ব্যাপারে জেলেদের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকে। যথারীতি এবারও মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। গত মে মাসে সরকারীভাবে এখানকার দুই হাজার ৩১জন জেলের মাঝে সহায়তা হিসেবে ৪০ কেজি পরিমাণ চাউল বিতরণ করা হয়। সরকারী হিসেবে চলতি মাসে আরও ৪০ কেজি পরিমাণ চাউল জেলেদের দেয়ার কথা রয়েছে।

অথচ গতকাল রবিবার এখানকার কয়েকশ জেলে স্থানীয় উপজেলা সদরে দল বেধে এসে সমুদ্রে মাছ ধরার ব্যাপারে সরকারী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেয়। এসময় তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেওয়া হলে প্রয়োজনে আমরা আন্দোলনে যাব। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হক সেতু বলেন, ‘সন্দ্বীপ চ্যানেলটি গভীর সমুদ্রের তীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত। গভীর সমুদ্রে জাল ফেলে যেসব জেলে মাছ আহরণ করেন তাদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখার জন্য সরকারী সহায়তায় উপজেলার ২ হাজার ৩১ জন জেলের মাঝে প্রতিজনকে মে মাসে ৪০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। জুন মাসেও চাল বিতরণ করা হবে।

এসময় তিনি আরো জানান, জেলেরা সরকারী সহায়তা কর্মসূচী গ্রহণ করে পুনরায় সমুদ্রে গিয়ে মাছ ধরার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক যে সীদ্ধান্ত দিবেন তা কার্যকর করা হবে। স্থানীয় জেলে সর্দার বাদল চন্দ্র দাস জানান, গভীর সমুদ্রে মৎস আহরণ বন্ধ থাকাকালীন সময়ে খালে বেহুন্দা জাল ও টং জাল ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে তারা আজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

স্মারকলিপি দিতে আসা কয়েকজন জেলে জানান, উপজেলার ডোমখালী, সাহেরখালী, মির্জানগর, জয়নগর, হাদিনগর, মঘাদিয়া, বামনসুন্দর, বাঁশখালী, পাতাকোট জেলেপাড়া মিলে মিরসরাইয়ে প্রায় ৫ হাজার জেলে সমুদ্রে জাল ফেলে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে। দুই মাস মাছ ধরতে না দেয়ার কারণে এখন সবাই অভাব অনটনে জীবন যাপন করছে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, জেলেরা আমার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি চিঠি দিয়েছে। আমি চিঠিটি জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবরে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এছাড়া সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর