কুড়িগ্রামের উলিপুরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার অপরাধে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছেন শিক্ষক। গুরুত্বর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পাঁচপীর কারিমিয়া নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসায়।
আহত শিক্ষার্থীর পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পাঁচপীর কারিমিয়া নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার হেফজ খানার ছাত্র পৌরসভার পূর্ব শিববাড়ী গ্রামের কামরুজ্জামানের পুত্র বায়জিদ ওরফে বিপুল মিয়া (১৫) সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী মোবাইল ফোন ব্যবহার করায় ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মাও. শফিকুল ইসলাম তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে মাদরাসার কক্ষে থাকা বাক্সে রেখে দেন।
এরপর বাক্সের চাবি দিয়ে গোপনে বিপুল মিয়া বাক্স খুলে মোবাইল বের করে নেন। শনিবার (১১ মে) শিক্ষক বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থী বিপুল মিয়া, নূর আলম, রেজাউল, মার্জান কে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন এবং মাদরাসার একটি কক্ষে আটক করে রাখেন। বেধড়ক মারপিটের কারনে বিপুল মিয়া গুরুত্বর আহত হন। পরে বিপুল মিয়া কৌশলে মাদরাসা থেকে পালিয়ে এসে ওই দিন বিকালে বাড়ির লোকজনকে ঘটনা জানালে স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীর পিতা ঘটনার বিচার চেয়ে রোববার (১২ মে) ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। আহত শিক্ষার্থীর পিতা কামরুজ্জামান জানান, ওই শিক্ষক মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে আমার ছেলেসহ ছোট ছোট ছেলেদের দিয়ে রাস্তায় চলাচলকারী বিভিন্ন লোকদের নিকট টাকা কালেকশন করত এবং উক্ত টাকা মাদ্রাসার কাজে ব্যবহার না করে নিজেই আত্মসাৎ করে আসছেন। তিনি আরও জানান, ওই বাক্সে আমার ছেলের মোবাইল ফোন ছিল না। অন্যায় ভাবে আমার ছেলেকে মারধর করা হয়েছে।
পাঁচপীর কারিমিয়া নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাও. শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি ভুল হয়ে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার জসিম উদ্দিন বলেন, শিশুটিকে মারপিট করার কারণে শনিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।