শিক্ষার্থীর মামলার আসামীকে গ্রেফতার মধ্যে দিয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলো পুলিশ

শেরপুর জেলার সদর উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের চৈতনখিলা দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার পথে উত্যাক্ত এবং শীল্লতাহানী করার মামলার একমাত্র আসামী বখাটে রিপন (২২) কে গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলো সদর থানার পুলিশ।

ধৃত আসামী রিপন সদর উপজেলা বাজিতখিলা ইউনিয়নের প্রতাবিয়া গ্রামের জনৈক ফয়েজ আলীর ছেলে।পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার প্রতাবিয়া গ্রামের কৃষক এবং একটি মসজিদের ইমাম মোঃ আঃ আজিজের কিশোরী কন্যা চৈতনখিলা জাব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়–য়া শিক্ষার্থী।

প্রতিদিন প্রতাবিয়া গ্রামের বাড়ী থেকে চৈতনখিলা মাদ্রাসায় যাবার পথে একই গ্রামের প্রতিবেশী ফয়েজ আলীর বখাটে ছেলে রিপন তাকে কুপ্রাস্তব এবং উত্যাক্ত করতো। ঘটনার দিন গত ১০ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই শিক্ষার্থী বরইতার কেরু মায়ের ভিটা নামক স্থানে পৌছামাত্র আগে থেকেই উৎপেতে থাকা বখাটে রিপন তাকে টানাহেচড়া শুরু করে দেয়।

এসময় শিক্ষার্থীর আত্মচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে বখাটে রিপন পালিয়ে যায়। পরে শীল্লতাহানীর শিকার ওই শিক্ষার্থী বাড়ি গিয়ে তার অভিভাবকে বিষয়টি জানায়। এঘটনায় প্রতাবিয়া গ্রামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ কতিপয় লোকজন ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালায় এবং কাল ক্ষেপন করতে থাকে। অবশেষে ওই শীল্লতাহানীর শিকার শিক্ষার্থীর বাবা আঃ আজিজ ১৩ মার্চ সদর থানায় বখাটে রিপনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে।

এদিকে গত ১১ এপ্রিল চৈতনখিলা মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত মাদক, বাল্যবিয়ে, জঙ্গীবাদ বিরোধী এক সমাবেশে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নজরুল ইসলাম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আমিনুল ইসলাম উপস্থিত শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দেন অভিযুক্ত বখাটে রিপনকে দ্রুত গ্রেফতার করে চৈতনখিলা জাব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে প্রকাশ্যে হাজির করবেন। এদিকে ২১ এপ্রিল রোববার দুপুরে রিপনকে সদর থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তাকে রোববার বিকেল ৪টায় মাদ্রাসা মাঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর জন সম্মুখে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বখাটে রিপনকে হাজির করে পুলিশ।

এসময় বক্তারা বলেন, চৈতনখিলা জাব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসার শীল্লতাহানী শিকার শিক্ষার্থীর আসামী রিপনকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে পুলিশ প্রমাণ করলো। এছাড়াও পুলিশ অফিসারগণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভবিষ্যতে এ মাদ্রাসাসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের কেউ ইভটিজিং ও শীল্লতাহানী অপরাধ কর্মকান্ডের ঘটনা ঘটালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা পুলিশকে স্যালুট দিয়ে সম্মান জানান।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আমিনুল ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নজরুল ইসলাম, পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ হায়দার আলী। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ কফিল উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন মডেল কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাঈদ, চৈতনখিলা জাব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওঃ আইন উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর