রিকশা চালক সেজে আসামী গ্রেপ্তার করেন পুলিশের এসআই

মোঃ আল মামুন খান, সাব-ব্যুরো প্রধান (সাভার/ধামরাই): সাভারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শফিকুল বারী চৌধুরী ওরফে বকুল হত্যা মামলার আসামী চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানা এলাকার মাজার গেটের জনৈক বাড়ীওয়ালা রফিকুলের বাসার একটি ভাড়া মেস থেকে আসামি মাসুমকে ভোর ৬ টায় গ্রেফতার করেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক তাহমুদুল। আসামি মাসুম খুন করে সাভার হতে পালিয়ে গিয়ে চট্টগ্রামের উক্ত বাসায় এসে ভুয়া নাম পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে নিরাপদে রিকশা চালিয়ে আসছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।

প্রসঙ্গত, সাভারের বকুল হত্যা মামলা একটি আলোচিত মামলা। গত ২১ শে মার্চ, ২০১৯ তারিখে সাভারের ব্যাংক কলোনী এলাকার তালবাগ মহল্লার এক ভাড়া বাসা হতে নিহত বকুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু উক্ত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামী মাসুমকে গ্রেফতার কিংবা হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য যেন কিছুতেই উদঘাটন করতে পারছিলো না সাভার থানা পুলিশ।

তবে হাল ছাড়েননি ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার চৌকস উপ-পরিদর্শক তাহমুদুল। ঘটনার পর হতেই আসামি গ্রেফতার ও মূল রহস্য উদঘাটনে তিনি সদা সচেষ্ট ছিলেন। দিনরাত্রি চেষ্টা চালিয়ে তিনি ঘটনার ২ মাস ৯ দিন পর আসামি মাসুমকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হলেন।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বকুল হত্যা মামলার আসামী গ্রেপ্তারের এই অপারেশনে অংশ নেওয়ার জন্য তাহমুদুল তার টিম নিয়ে ২ দিন চট্টগ্রাম অবস্থান করেন।

এসময় সারাদিন রিকশা চালকের ছদ্মবেশে লুঙ্গি পড়ে রিকশা চালিয়ে আসামী মাসুমের কাছে সহজেই পৌছে যান এবং তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তার টিমের চৌকস দুই কনস্টেবল সোহেল মাহমুদ ও খাইরুল ইসলাম। তাদের সফরসঙ্গী হয়ে উক্ত অপারেশনে আসামি ধরতে বিশেষ সহযোগিতা করেন মামলার বাদী এ্যাডঃ শাকিলা আফরোজ সীমার স্বামী এ্যাডঃ ফয়জুল ইসলাম নাজমুল।

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মাসুম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও এখনও পুরোপুরি মুখ খোলেননি । এ ব্যাপারে এসআই তাহমুদুল জানান, আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এবং সকলের সহযোগিতার ফলেই মূল অাসামী গ্রেফতার করতে পেরেছি। হত্যাকাণ্ডের কারন এবং এর সাথে জড়িত অন্যদের সহ বাকী রহস্য উদঘাটনের জন্য সিনিয়র অফিসারদের সাথে আলাপ করে বিজ্ঞ আদালতে আসামীর রিমান্ডের প্রার্থনা করে অচিরেই মূল রহস্য বের করে দোষীদের শান্তি নিশ্চিত করবো।

এ ব্যাপারে মামলার বাদীর স্বামী এ্যাডঃ ফয়জুল ইসলাম নাজমুল জানান, ব্যবসায়িক কারনে পাওনা টাকা চাইতে যাওয়ার জের ধরেই তার শ্বশুরকে সুপরিকল্পিতভাবে খুন করতে মাসুমকে ‘কিলার’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে তাদের ধারনা। আসামি কে রিমান্ডে আনা হলেই সব বের হয়ে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।বকুল হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত আসামী মাসুম কে গ্রেফতার করতে পারায় এলাকাবাসী সাভার থানা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছে এবং সেই সাথে অতি দ্রুত উক্ত খুনের বাকি অজানা রহস্য উম্মোচিত হবে বলেও তারা আশা প্রকাশ করেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর