দুস্থদের চাল পাচ্ছেন মেম্বারের স্বচ্ছল স্বজনরা

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার শিহিপাশা এলাকায় দুস্থদের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিডি) ২১টি কার্ডের মধ্যে ১৩টি কার্ডই পেয়েছেন গৈলা মডেল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার (ইউপি সদস্য) আব্দুল কুদ্দুস মোল্লার স্বচ্ছল স্বজনরা। কার্ড পেয়েছেন মেম্বার আব্দুল কুদ্দুস মোল্লার চাচা, ভাতিজা, বোন, দুলাভাই, ভাগনি, বেয়াই, বেয়াইয়ের ছেলে, চাচাতো ভাই, মামাতো ভাই, মামাতো ভাইয়ের ছেলে, মামাতো বোনের মেয়ে জামাইসহ মামাতো বোনের দেবর।

এদের প্রায় সকলেই অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থ। বেশির ভাগ ব্যক্তিরই রয়েছে পাকা বাড়ি। এরই মধ্যে অবস্থাসম্পন্ন তারা ভিজিডি কার্ড দিয়ে তিন মাসের সরকারি চাল উত্তোলন করেছেন।

ইউপি সদস্যের স্বচ্ছল স্বজনদের কার্ড দেয়ার কারণে দুস্থদের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিডি) সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এলাকার অসহায় দরিদ্ররা।

স্থানীয়রা জানান, গৈলা মডেল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার কুদ্দুস মোল্লা চলতি অর্থবছরে এলাকার দুস্থদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী অন্যান্য মেম্বারদের মতো তার ওয়ার্ডের দুস্থদের জন্য ২১টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ পান। ২১টি কার্ড এলাকার হত দরিদ্র, দুস্থদের না দিয়ে তিনি ১৩টি কার্ডই নিজের স্বজনদের মধ্যে বিতরণ করেন। স্বজনদের মধ্যে কার্ড বণ্টনের বিষয়টি চাল উত্তোলনের পর এলাকায় জানাজানি হলে দুস্থদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়।

দুস্থদের পক্ষে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছেন ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা আশরাফ ফরিয়া। তিনি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ইউপি সদস্য কুদ্দুস মোল্লার বণ্টন করা তালিকা অনুযায়ী সবাই তার পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয়। এলাকার অসহায়, দুস্থ, সম্পদহীন, দিনমজুর, দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী পরিবার রয়েছে। তাদের কার্ড দেয়া হয়নি। মেম্বারের বণ্টন করা ভিজিডি কার্ডধারী পরিবারের সদস্যরা বয়স্ক ভাতার আওতায় থেকে বিদেশে পর্যন্ত রয়েছেন। কার্ডের সুবিধাভোগী পরিবারের ১২০ শতক জমি, টিনের দোতলা ঘর এবং পাকা বাড়িও রয়েছে। কার্ডের সুবিধাভোগীরা কেউই দুস্থ নয়, সকলেই স্বচ্ছল ও অবস্থাসম্পন্ন।

সরেজমিনে একাধিক কার্ডধারীর বাড়ি গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে মেম্বার (ইউপি সদস্য) আব্দুল কুদ্দুস মোল্লা বলেন, যদি আমার কার্ড বিতরণে অনিয়ম হয় তাহলে প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা মাথা পেতে নেব।

গৈলা মডেল ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুল হোসেন টিটু বলেন, মেম্বারের ভিজিডি কার্ড বণ্টনে কিছু অনিয়ম হয়েছে ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, কার্ড বিতরণে অনিয়মের কোনো অভিযোগ এখনও আমি হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি দরিদ্রদের কার্ড দরিদ্রদের ফিরিয়ে দেয়া হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর