বাংলাদেশের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার তেমন সুযোগ হয় না কূটনীতিকদের। চাকরি জীবনের প্রায় সময়টাতেই পরে থাকতে হয় ঢাকায়।তবে এমন বোরিং লাইফের একটা সুরাহা করে দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।চায়ের শহর শ্রীমঙ্গলে এসেছেন এবং সাথে এনেছেন ৩৫ দেশের রাষ্ট্রদূত। গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ হোটেলে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মন্ত্রী বলেছেন, ‘একটা দেশের কতকিছু সুন্দর তা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন তারা। তাদের মন্তব্য— সবুজ শ্যামলিমা পরিবেশ, লোকজ গান, শিল্প-সংস্কৃতিসহ আমাদের গর্ব করার মতো অনেক কিছু আছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিমন্ত্রণে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে আছেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, সিঙ্গাপুর, ব্রাজিল, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মরক্কো, নেপাল, ভুটান, কুয়েত, তুরস্ক, ওমান, ফিলিপাইন, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানসহ ৩৫টি দেশের কূটনীতিক। এছাড়া উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএনডিপি, সার্ক, বিমস্টেক, ইউএনএফপিএ, ইউসিকেইএফ বিডি, ইউএনএইচসিআর, ইউএসডিএসএস কর্মকর্তারাও এসেছেন।
শ্রীমঙ্গলে মণিপুরি নৃত্যে অভ্যর্থনা জানানো হয় রাষ্ট্রদূতদেরশুক্রবার দুপুরে হোটেলে পৌঁছালে বাদ্যযন্ত্রের তালে মণিপুরি নৃত্য পরিবেশন করে ও ফুল দিয়ে অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। বিকালে রামনগর মণিপুরি পল্লী ও ইস্পাহানি টি কোম্পানির চা বাগান ও কলকারখানা পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূতরা। শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকায় ফিরে যাবেন তারা।
পর্যটনের অন্যতম খাত এভিয়েশন নিয়ে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট পাওয়া যায় না। ৪১৯ জনের উড়োজাহাজ, অথচ ভেতরে গেলে দেখা যায় মাত্র ৫৩ জন যাত্রী। বাকি সব আসন খালি। বিমানের লোকসান দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা চুরি হচ্ছে। এই চোরদের শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে।’
শ্রীমঙ্গলে জেরিন চা বাগানে রাষ্ট্রদূতরাপৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ১ কোটি ১৬ লাখ প্রবাসী আছেন। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী মনে করেন, বাংলাদেশি নারী-পুরুষরা বিদেশে যাওয়ার পর ভাষাগত কারণে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। তার মন্তব্য, ‘তারা ইংরেজিও বলতে পারে না, আরবিও বলতে পারে না। তাই বিদেশ যাওয়ার আগে তাদের ভাষা শেখানো ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার। আর যারা বিদেশে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন, তাদের জন্য সরকার আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। অনেকেই সেখানে আশ্রয় নিচ্ছে। তাদের অনেকেই আবার দেশে আসতে চায় না।’
এ সময় ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. শাহ জালাল।