পালিয়েছে স্বর্ণ চোরাকারবারিদের গডফাদার দোলন

আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর চোখে ধুলা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে স্বর্ণ চোরাকারবারিদের গডফাদার এনামুল হক খান দোলন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার (১০ এপ্রিল) সকালে একটি ফ্লাইটে কুখ্যাত এই চোরাকারবারি ব্যাংককে পাড়ি জমিয়েছে। বর্তমানে সে থাইল্যান্ডে স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের ছত্রছায়ায় দেশটিতে অবস্থান করছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করলেও ব্যাংককে আত্মগোপনে থাকা দোলনকে খুঁজছে থাই পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, স্বর্ণ চোরাচালানের মূলহোতা দোলন ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না স্বর্ণ পাচার। শুল্ক গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারির মধ্যেও শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসছে স্বর্ণ। বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে। চোরাচালানে জড়িত স্বর্ণ ব্যবসায়ী দোলনের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে স্বর্ণ চোরাচালানের অব্যাহত রেখেছে দোলন। তার মালিকানাধীন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভার্স ও শারমিন জুয়েলার্সের আড়ালে স্বর্ণ পাচার সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছে। দোলনের স্বর্ণ চোরাচালানের বিষয়ে গত সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরই সে ব্যাংকক পালিয়েছে। থাইল্যান্ডের স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের ছত্রছায়ায় থাকা দোলনকে থাই পুলিশ খুঁজছে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

শুল্ক গোয়েন্দারা মাঝে মধ্যে চোরাচালানের স্বর্ণ জব্দ করছেন। বাহকদের তুলে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। মামলা হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু চোরাচালানের মূলহোতা এনামুল হক খান অধরাই থেকে যাচ্ছে। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নজরদারিতে রয়েছেন স্বর্ণ চোরকারবারিদের গড ফাদার দোলন। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, এনামুল হক খান দোলন দুবাই এবং সিঙ্গাপুর সিন্ডিকেটের সহায়তায় দুবাই এবং সিঙ্গাপুর হতে বাংলাদেশে আগমনকারী বিভিন্ন যাত্রীর মাধ্যমে সোনা ও অলংকার দেশে পাঠায়। বিধি বহির্ভূতভাবে মূল্য পরিশোধসহ বিদেশে অর্থ পাচার করেন।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে এনামুল হক খান দোলনের মানি লন্ডারিংয়ের সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়েছে দুবাইয়ের ফিন্যান্সিয়াল ইল্টেলিজেন্স ইউনিট। তার বিরুদ্ধে দুবাইভিত্তিক স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছে দুবাইয়ের অর্থ পাচার প্রতিরোধ ইউনিট। চোরাচালানের রহস্য উন্মোচনের জন্য দোলনের কাছ থেকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মজুদ সব স্বর্ণের হিসাব নিয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন সে অবৈধ কারবার চালিয়ে গেলেও এতোদিন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, দেশে-বিদেশে অন্তত অর্ধশতাধিক গডফাদার চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। এসব গডফাদারদের শনাক্ত ও পরিচয় বের করা হয়েছে। কিন্তু উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ ও অনেক গডফাদার দেশের বাইরে থাকার কারণে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। অবৈধভাবে আসা স্বর্ণের টাকা দিয়ে অস্ত্র ও মাদক কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।

বার্তাবাজার/মা.ই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর