পরিচালনগত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব বাংলাদেশের অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলোকে অপতথ্যের ঝুঁকিতে ফেলছে। দেশের ৩৩টি সংবাদ ওয়েবসাইটের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘ডিজইনফর্মেশন রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট : দ্য অনলাইন নিউজ মার্কেট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই গবেষণার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। গ্লোবাল ডিজইনফর্মেশন ইনডেক্সের (জিডিআই) সঙ্গে জোট বেঁধে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে ডিজিটালি রাইট নামে একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজইনফর্মেশন রিস্ক স্কোরে বাংলাদেশের সংবাদ সাইটগুলো সার্বিক বিচারে মাঝারি ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্পাদকীয় সক্ষমতায় স্কোর যেখানে ১০০ তে ৮৬, সেখানে পরিচালনগত স্বচ্ছতায় স্কোর মাত্র ২৯। আর পরিচালনগত দুর্বলতার কারণে সার্বিক স্কোর দাঁড়িয়েছে ৫৮, যা জিডিআই গবেষণা পদ্ধতিতে মধ্যম পর্যায়ের ঝুঁকি বলে বিবেচিত।
এ ছাড়া দেশের ১৬টি সাইটের ক্ষেত্রে অপতথ্যের ঝুঁকি ছিল উঁচুমাত্রার, এবং বাকিগুলোর ঝুঁকি ছিল মধ্যম মাত্রার। এর মধ্যে এমন মর্যাদাপূর্ণ সাইটও আছে, যারা তাদের স্বাধীন সংবাদ কাভারেজের জন্য সুপরিচিত। তবে কোনো সংবাদ সাইটই সর্বোচ্চ ঝুঁকি রেটিং বা নিম্নঝুঁকির তালিকায় আসেনি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সংবাদ সাইটগুলোতে অপতথ্য ঝুঁকির প্রধান উৎস হলো পরিচালনগত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব। পক্ষপাতমুক্ত, নিরপেক্ষ ও নির্ভুল সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে সব সাইটই ভালো স্কোর করেছে। কিন্তু ২৮টি সাইটে কোনো ধরনের নির্ভুলতা-সংক্রান্ত নীতিমালা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া বিনিয়োগ ও মালিকানা কাঠামো-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশেও সাইটগুলো দুর্বল স্কোর করেছে।
বাংলাদেশের সংবাদ সাইটগুলো সহজেই জার্নালিজম ট্রাস্ট ইনিশিয়েটিভের মানদণ্ডে সাংবাদিকতার যে উত্তম চর্চাগুলোর কথা বলা হয়েছে, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারে বলে গবেষণায় জানানো হয়।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে জিডিআই গবেষণা পরিচালক টালিয়া হেগার্টি, প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির, চ্যানেল ২৪ এর নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুন, ঢাকায় এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিজিটালি রাইটের প্রতিষ্ঠাতা মিরাজ আহমেদ চৌধুরী।
বার্তা বাজার/জে আই