৯ বছরে ব্যাংক খাতে অনিয়ম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা: সিএজি

৯ বছরে দেশের ব্যাংক খাতে অনিয়ম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর অডিট রিপোর্টের তথ্যে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সিএজি প্রতিবেদন মতে, ২০১৩ সালে ব্যাংকিং খাতে আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়েছিল ৬৫২ কোটি টাকার। ২০২১ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ৯ বছরে ব্যাংক খাতে আর্থিক অনিয়মের হার বেড়েছে ১৬.৮৬ গুণ।

সিএজি বলছে, সরকারি অর্থের অনিয়মের ৫২.১৮ শতাংশ হচ্ছে ব্যাংকিং খাতে। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই ৪ বছরের অডিট রিপোর্টে মোট ৫৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার অনিয়ম চিহ্নিত করেছে সিএজি।

ব্যাংকাররা জানান, ব্যাংক খাতে সুশাসন না থাকার কারণে এমনটি হয়েছে। ব্যাংকে অনিয়ম তখনই বেশি হয়, যখন ব্যাংক কর্মকর্তারা দুর্নীতি করতে উৎসাহ পান।

অথবা অনিয়ম করলে শাস্তি হয় না।

সিএজি’র তথ্য অনুযায়ী, গত চার বছরে (২০১৮ থেকে ২০২১ সাল) ৩১ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান ও ঋণ শোধের যোগ্যতাহীন প্রতিষ্ঠানকে ভুয়া বন্ধকি নিয়ে ঋণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভুয়া জমি, সরকারি খাসজমি মর্টগেজ রেখে গ্রাহককে ঋণ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত জামানত ছাড়া ঋণ বিতরণ, শ্রেণিকৃত দায় থাকার পরও ত্রুটিপূর্ণ সহায়ক জামানতের বিপরীতে এবং গ্রাহকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ঋণ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

সিএজির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ খাতে ঋণ ইস্যু ও নিয়ন্ত্রণহীন এলাকার বাইরে তড়িঘড়ি করে ঋণ মঞ্জুর, শাখার আপত্তি উপেক্ষা ও বন্ধকি সম্পত্তি মূল্যায়ন ছাড়া ঋণ ইস্যু, মঞ্জুরি শর্ত অমান্য করে অনিয়মিতভাবে ওডি ঋণ দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধিকাংশ অনিয়মের ক্ষেত্রে ব্যাংকের ঋণ বিতরণ নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন, আর্থিক বিধিবিধান ও সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ের আদেশও অমান্য করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ব্যাংক খাতে অনিয়ম করার ক্ষেত্রে আলোচিত নামগুলো হচ্ছে— অ্যানন টেক্স, ক্রিসেন্ট গ্রুপ ও হলমার্ক গ্রুপ।

২০২১ সালের সিএজির রিপোর্টের তথ্য মতে, ব্যাংকিং খাতের অনিয়মের পরিমাণ ১০ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের রিপোর্টে চিহ্নিত করা হয়েছিল ৫ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়েছিল ৮ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। সূত্র: মানবজমিন।

বার্তাবাজার/ই.এইচ.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর