রাত থেকেই বাড়ছে মোবাইল কলরেট

বাজেট ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বাড়তি ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের বোঝা।

অর্থমন্ত্রীর বাজেট ঘোষণার পরপরই মোবাইল ফোন অপারেটরদেরকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। ইতিমধ্যে মোবাইল অপারেটররাও বাড়তি শুল্ক কার্যকর করার জন্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন রবি’র প্রধান চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার। বর্তমানে গ্রাহকরা সম্পূরক শুল্কের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং আরও এক শতাংশ সারচার্জ দিয়ে আসছে সরকারকে।

দেশে বর্তমানে ১০ কোটি গ্রাহক মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। নতুন সম্পূরক শুল্ক কার্যকর হওয়ার ফলে প্রত্যেকের কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার বা এসএমএস আদান-প্রদানসহ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অন্য যেকোনো সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে খরচ বাড়বে।

জুন ২০১৫ পর্যন্তও মোবাইল ফোন ব্যবহারে শুধু ১৫ শতাংশ ভ্যাটই দিতেন গ্রাহক। এই ভ্যাটের প্রচলন অবশ্য দেশে যখন মোবাইল ফোন এসেছে সেই দিন থেকেই। ভ্যাটের এই বিষয়টি মানুষের গা সওয়াই ছিল। কিন্তু তারপর থেকে প্রতিটি বাজেটে এই ধারার খরচ বেড়েছে। ২০১৫-১৬ সালের বাজেটে প্রথমবার মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর সম্পূরক শুল্ক নিয়ে আসা হয়।

প্রথমে ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দিলেও পরে তা ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয় বিভিন্ন পক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে। কিন্তু দুই বছর বাদেই কিন্তু আবার এই শুল্ক ৫ শতাংশ করে দেওয়া হয়, যেটি এবার ১০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হলো।

মাঝে যোগ করা হয়েছে ১ শতাংশ সারচার্জ। নতুন সম্পূরক শুল্ক আসার কারণে এখন মোবাইল ফোনের ব্যবহারের ওপর মোট ট্যাক্স গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ২৭ দশমিক ৭৭ শতাংশে। ফলে কেউ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোনো একটি সেবা নিতে যদি ১০০ টাকা রিচার্জ করেন তাহলে তিনি ৭৮ দশমিক ২৭ টাকার সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। আর বাকি ২২ দশমিক ৭২ টাকাই চলে যাবে সরকারের কোষাগারে।

বাংলাদেশের মানুষ এখন একেকটি সংযোগে মাসে গড়ে ১৫০ টাকা খরচ করে। নতুন ট্যাক্সের করণে তার খরচের হিসেবে আরও ১৫ থেকে ২০ টাকা যোগ হবে। আর গত পাঁচ বছর ক্রমান্বয়ে খরচ বাড়ার হিসাবটা ধরলে টাকার অংক কয়েক হাজারে চলে যায়।

এর মধ্যে ২০১৭-১৮ সালের বাজেটে মোবাইল ফোন আমদানির ওপরে ভ্যাট একধাপে ১৫ শতাংশে নিয়ে আসা হয়, যদিও সে সময়ই স্থানীয় সংযোজনের ওপর দেওয়া হয় কিছু সুবিধা। আর পরের বছর হ্যান্ডসেট আমদানিতে বাড়িয়ে দেওয়া হয় সম্পূরক শুল্কও। ফলে যেটি হলো একেকটি স্মার্টফোনের ওপর গড় খরচ বাড়ল এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।

আমারা বারবার দেখছি, এই খাত থেকে টাকা আয় করা যেহেতু অনেক সহজ আর সে কারণেই দফায় দফায় সরকার কেবল এই খাতের ওপরেই হাত বাড়াচ্ছে–নীতির দ্বিমুখিতা থাকার পরও।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর