পাসপোর্ট না পেয়ে ভিপি নুরের ক্ষোভ প্রকাশ

পাসপোর্ট চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ভিপি) নুরুল হক নুরের করা রিট আবেদনের ওপর আগামী বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুনানির জন্য রেখেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বোধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার এ আদেশ দিয়েছেন।

এদিকে রিট আবেদনের ওপর রবিবার শুনানি না হওয়ায় এবং পাসপোর্ট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভিপি নুর। এদিন দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে ভিপি নুর তার প্রতিক্রিয়া জানান।

এ সময় সেখানে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদও তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পাসপোর্টের জন্য গত ২৩ এপ্রিল পাসপোর্ট অধিদপ্তরে আবেদন করেন ভিপি নুর। জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট পাবার জন্য যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ফি জমা দেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর গত ২ মে তাকে পাসপোর্ট দেবার দিন নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পেয়ে গত পহেলা আগস্ট আদালতে রিট আবেদন করেন তিনি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে টানা ৪৪ দিন অবকাশ থাকায় ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয়নি।

এ অবস্থায় ভিপি নুরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ রবিবার আদালতে রিট আবেদনটির ওপর শুনানির দিন ধার্য করতে আবেদন জানান। কিন্তু আদালত শুনানির দিন ধার্য না করে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যেতে বলেছেন।

এ অবস্থায় অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ বলেন, পাসপোর্টটি জরুরি বিষয়। জরুরি ভিত্তিতে শুনানির জন্যই আমরা আদালতের শরনাপন্ন হয়েছিলাম। কিন্তু আদালত তা করলেন না। এতে আমার আশংকা, সরকার হয়তো ভিপি নুরকে পাসপোর্ট দিতে চাচ্ছে না। তিনি বলেন, জানুয়ারিতে যদি আবার সরকার সময় চায়, আদালত যদি সময় দেয় তাহলে হয়তো ভিপি নুরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

ভিপি নুর বলেন, আমি ডাকসু ভিপি হয়েও এ পর্যন্ত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা ৪ বার হামলার শিকার হয়েছি। এ কারণে আমি শারীরীকভাবে আহত। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে বিদেশে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন।

সে কারণে আমি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করি। কিন্তু পাসপোর্ট দেয়নি রহস্যজনক কারণে। পাসপোর্ট না পেয়ে আমি আদালতের শরনাপন্ন হই। পহেলা আগস্ট আদালতে রিট আবেদন করি। দীর্ঘদিন আদালত বন্ধ ছিল। এ কারণে শুনানি হয়নি।

আজ আমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ শুনানির জন্য দিন ধার্য করার আবেদন জানান। কিন্তু আদালত শুনানির দিন ধার্য করতে রাজি হননি। কবে শুনানি হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, এতে আমার কাছে স্পষ্ট প্রতিয়মান যে, সরকার হয়তো আদালতকে প্রভাবিত করেছে আমার পাসপোর্ট না দেওয়া জন্য। এটা যদি হয়ে থাকে তবে তা নিন্দনীয়। তিনি বলেন, দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে তার প্রমাণ আমার পাসপোর্ট না দেবার বিষয়টি।

বিচারকরা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে। এতে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থাহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে। এটা বিচার বিভাগের চিত্র হতে পারে না। আদালতের প্রতি সম্মান করে বলবো, জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল আদালত। আপনারা বিবেকের দ্বারা পরিচালিত হয়ে জনকল্যাণে রায় দেবেন।

তিনি বলেন, পাসপোর্ট পাওয়া একজন মানুষের মৌলিক অধিকারেরই অংশ। একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আমার অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য বিদেশ যেতে হতে পারে। যেমন পাসপোর্ট না থাকার কারণে নেপালে একটি অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। অক্সফোর্ড ছাত্র ইউনিয়নের একটি অনুষ্ঠানেও যেতে পারছি না।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর