সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ওসি ও তিন পুলিশসহ আহত ২০

সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার ওসি ও তিন পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা সদরের উচালিয়াপাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূরুল হক জানান, উচালিয়াপাড়া মোড়ে শামীম মিয়া ও ইউনুস মিয়া পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ ছয় রাউন্ড রাবার বুলেট ও চার রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

ওসি শাহাদাৎ হোসেন টিটুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতরা সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আহত অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই আলাউদ্দিন, গোপী নাথ সরকার ও এনামুল হক। অন্য আহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।এলাকাবাসী জানান, সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের উচালিয়াপাড়া মোড়ের উভয় পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা।

অভিযানকে কেন্দ্র করে সরাইল ডিজিটাল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ইউনুস মিয়া এবং অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক শামীম মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

পরে বুধবার (৭ আগস্ট) আবারও উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। সেখানে পুলিশ পাঠায় সরাইল থানা। পরে সরাইল থানার ওসির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন ওসি শাহাদাৎ হোসেন টিটু ও আরও তিন পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন বলেন, ‘পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আজ রাত অথবা কাল সকালে এই মামলা দায়ের করা হবে। দোষীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

সোমবারের উচ্ছেদ অভিযান প্রসঙ্গে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এএসএম মোসা বলেন, ‘ঈদের পর কাগজপত্র দেখে সিঁড়িটি অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সংঘর্ষঘটনা সম্পর্কে হাসপাতাল মালিক ইউনুস মিয়া বলেন, ‘আমার হাসপাতালের সিঁড়ি আমার জায়গায় আছে। ইতোপূর্বে সিঁড়ি নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় মামলা করি।

মামলার রায় আমাদের পক্ষে আসে। এই বিষয়টি অভিযানকালে ইউএনওকে দেখাতে গেলে উচালিয়া পাড়ার অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক শামীম ও তার সহযোগী মোবারককে নিয়ে আমাকে বাধা দেয়। এসময় তারা আমার হাসপাতালের সিঁড়িটি ভাঙ্গার ব্যাপারে ইউএনওকে চাপ দেয়।

আমি মনে করি, তারা আমার হাসপাতালের সিঁড়িটি ভাঙ্গার ব্যাপারে ষড়যন্ত্র করেছে।’ এ প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক শামীম মিয়া জানান, ‘সোমবার (৫ আগস্ট) সড়ক ভিভাগের জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

সেসময় তিনি বেশ কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। হাসপাতালের সিঁড়িটিও সড়ক বিভাগের জায়গায় পড়েছিল। সেটি ভাঙতে গেলে হাসপাতাল মালিক ইউনুস মিয়া বাধা দেন। এসময় সে কিছু কাজগপত্র ইউএনওকে ধরিয়ে দেয়। সাধারণ ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করেন।

তারা বলেন, আইন সবার জন্য সমান। আমাদের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হাসপাতালের সিঁড়িটিও ভাঙতে হবে। আমি সেইদিন সাধারণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একমত ছিলাম। এজন্য ইউনুস মিয়ার পক্ষের লোকজন আমার ওপর হামলা করে শারীরিকভাবে আহত করে।

খবর পেয়ে আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সেখানে প্রতিবাদ করেন। আমি কোনও সংঘর্ষে জড়াইনি।’

বার্তা বাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর