বহিরাগতদের মহড়া, ইবি ক্যাম্পাসে উত্তেজনা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তার করতে বহিরাগত, অছাত্র, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জড়ো করে মহড়া দিতে দেখা গেছে। টেন্ডারবাজির নামে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে এসব ছাত্রত্ব শেষ হওয়া নেতা-কর্মীদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সোমবার সকালে তারা মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পরবর্তীতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বহিরাগত ইবির সাবেক শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন আলো, জুবায়ের আল মাহমুদ ও ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য তন্ময় সাহা টনির নেতৃত্বে মহড়া দেয়। এসময় তাদের সাথে মহড়ায় বেশ কয়েকজন বর্তমান শিক্ষার্থীকে দেখা যায় তারা হলেন, অর্থনীতি বিভাগের আল আমিন,ইতিহাস বিভাগের মিজান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্বপ্ন, আইন বিভাগের বিশাল, লোকপ্রশাসন বিভাগের জয়, ফিন্যান্স ব্যাংকিং বিভাগের সাদমান সাকিবসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে নিয়ে তারা এ মহড়া দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়।

মহড়ার বিষয়ে বহিরাগত ইবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের আল মাহমুদ বলেন, আমাদের হানিফ ভাইয়ের নির্দেশে আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শোডাউন দিয়েছি এখানে কোনো ধরনের বহিরাগত মাদকাসক্ত ছিলো না।

জুবায়ের এর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এমপি মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, এবিষয়ে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কারো সাথে যোগাযোগ হয়নি সে বাটপারি কথা বলেছে। তিনি জুবায়ের আল মাহমুদ এর ব্যাপারে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।

এবিষয়ে আলমগীর হোসেন আলো বলেন,এখানে কেউ বহিরাগত না, আমরা ছোট ভাইদের সাথে একসাথে ঘোরাফেরা করা যদি আপনারা শোডাউন মনে করেন তাহলে কিছুই করার নেই, আপনার ছাত্রত্ব শেষ এমন অভিযোগ এসেছে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব আলতু ফালতু প্রশ্ন করার দরকার নেই। আমার ছাত্রত্ব আছে দরকার হলে প্রশাসনে গিয়ে খোঁজ নেন।

কেন শোডাউন দিয়েছেন এব্যাপারে জানতে চাইলে তন্ময় সাহা টনি বলেন, বর্তমান ছাত্রলীগের কিছু কার্যক্রমে আমরা সন্তুষ্টনা, যেগুলো মেনে নেওয়ার মত না তারা মিচ্যুয়াল ভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে যেকোনো কাজে যদি বর্তমান ছাত্রলীগ কোন অসঙ্গতিপূর্ণ কাজ করে তাহলে সেটা আমরা মেনে নিবো না।

এ বিষয়ে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ক্যাম্পাসে কিছু বহিরাগত নেতারা টেন্ডারবাজির নামে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে যা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কখনই মেনে নিবে না, ইবি শাখা ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজির সাথে কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সুন্দর ও পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস উপহার দিতে চাই।

ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম রবিউল ইসলাম পলাশ বলেন, আমাদের কোন কর্মকান্ডে তারা অসন্তুষ্ট? আমরা ছাত্রলীগ করি আমরা ছাত্রদের জন্য কাজ করি। অতীতে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কিছু অপবাদ ছিলো আমরা সেগুলো দূর করার চেষ্টা করেছি। আমরা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা চাচ্ছি না আমরা চাই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু ভাবে ক্লাস করুক।আমরা মনে করি না আমাদের কর্মকান্ডে কেউ অসন্তুষ্ট। আমরা যে কাজ করছি এটা মূল্যায়নের দায়িত্ব সাধারন শিক্ষার্থীদের।

ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. আনিচুর রহমান বলেন,আমরা বিষয়টা খতিয়ে দেখছি যদি তাদের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহীনুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা করার জন্য যেকোন মহল যে কেউ চেষ্টা করুক না কেন তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

বার্তাবাজার/আরএইচ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর