মায়ের কোল থেকে শিশুকে নিয়ে গণধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা

মায়ের সাথে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছিল শিশুটি। সেখান থেকে তাকে চুরি করে নিয়ে যায় দুই ব্যক্তি। এরপর গণধর্ষণ করে গলাকেটে হত্যা করা হয় তাকে।

নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে।

জামশেদপুরের রেলস্টেশনে মায়ের সাথে যখন ঘুমাচ্ছিল, তখনই তাকে চুরি করা হয়। এতে জড়িত সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা আগেও ধর্ষণের অভিযোগে জেল খেটেছে বলে জানা গেছে।

গ্রেফতারকৃতদের একজনের মা ঝাড়খণ্ড পুলিশের কর্মী, অন্যজনের বাবা কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশের।

ঝাড়খণ্ডের পুলিশ বলছে, ২৫ জুলাই রাতে ইস্পাত নগরী বলে পরিচিত জামশেদপুর বা টাটানগর রেল স্টেশনে মায়ের সাথে ছোট্ট শিশুটি ঘুমিয়ে থাকার সময়ই দুই ব্যক্তি তাকে চুরি করে।

ওই শিশুটির মা পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার বাড়ি ছেড়ে উড়িষ্যার দিকে যাচ্ছিলেন এক পুরুষ সঙ্গীর সাথে। পথে টাটানগর স্টেশনে থেমেছিলেন তারা।

মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশের কাছে নিজের পুরুষ সঙ্গীর নামেই শিশু অপহরণের অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

তখন মায়ের পুরুষ-সঙ্গীকে গ্রেফতার করে জেলেও পাঠায় পুলিশ।

কিন্তু তারপরে ক্লোজড সার্কিট টিভির ফুটেজ দেখে শিশুটির অপহরণকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

জামশেদপুরের রেল-পুলিশের এস পি এহতেশাম ওয়াকারীব বিবিসিকে বলছিলেন, “প্রথমে ওই শিশুর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তার পুরুষ-সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হলেও সিসিটিভির ফুটেজ থেকে অপহরণকারীদের ছবি নিয়ে সেটা গোয়েন্দাদের মধ্যে আর সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। সেই সূত্রেই খবর আসে যে রিঙ্কু সাহু নামের এক যুবক এই অপরাধের সাথে যুক্ত।”

পুলিশ প্রথমে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে খুঁজে পায়নি। অন্যান্য জেলাতে তল্লাশি টিম পাঠিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

“অপরাধের কথা সে স্বীকার করেছে। সে-ই দেখিয়ে দেয় যে কোথায় ওই শিশুটির দেহ পুঁতে রেখেছিল। অপরাধের সাথে জড়িত অন্য ব্যক্তি কৈলাশ কুমারের নামও সে-ই জানায়। দুজনেই এখন পুলিশ হেফাজতে,” বলছিলেন এহতেশাম ওয়াকারীব।

গতবছর মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে একটি তিনমাসের শিশুকেও অনেকটা একই ভাবে তার ঘুমন্ত বাবা-মায়ের পাশ থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে মাথা থেঁতলে মেরে ফেলে এক ব্যক্তি। পরে ২২ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় সেখানকার আদালত।

বছর তিনেক আগে কলকাতা শহরের একটি ফুটপাথ থেকে এক কিশোরীকে অপহরণ করে একটি অ্যাপক্যাবের চালক ও তার বন্ধু, তারপরে তাকে ধর্ষণ করে খালে ফেলে দেয়।

তবে দীর্ঘদিন ধরে পথ-শিশুদের নিয়ে কাজ করে, এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রাজকের প্রধান দীপ পুরকায়স্থ বলছিলেন পথ-শিশুদের ওপরে এধরনের ঘটনা খুবই বিরল।

“আমরা ২২ বছর ধরে পথ-শিশুদের নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু এরকম নৃশংস ঘটনা খুবই বিরল। পথ-শিশুদের কিন্তু নিজেদের একটা নেটওয়ার্ক থাকে যা তারা নিজেদের অজান্তেই তৈরি করে নেয়, যার মধ্যে বড়রা যেমন থাকে, তেমনই স্টেশন বা রাস্তার দোকানদার, হকার – এরাও থাকেন। একে অপরের যে কোনো প্রয়োজনে এরাই এগিয়ে আসেন।”

জামশেদপুরে যে শিশুকন্যাটিকে ধর্ষণ করে গলা কেটে মেরে ফেলা হয়েছে, তার একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। হাসিখুশি মুখে সোনালী আর সবুজ রঙের চুড়ি হাতে পরে সে যেন কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আনন্দে মশগুল।

বার্তা বাজার/এসআর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর