মেধাশূন্য ভবিষ্যত উঁকি দিচ্ছে বাংলাদেশকে

প্রায় বছরদুয়েক ধরে নিয়মিতভাবে সামান্য বিরতি ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে মোবাইল আসক্তি বেড়েই চলছে। তাদের মেধা মননে একটা বড় অংশে জায়গা করে নিচ্ছে ভার্চুয়াল এক আলাদা জগত, যে কারণে অনেক শিক্ষার্থী বিশেষ করে বাচ্চাদের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন ও আগের প্রজন্মের সাথে মানসিক দূরত্ব ও বৈষম্য পরিলক্ষিত হতে দেখা যাচ্ছে দেখা যাচ্ছে দিন দিন। এমত অবস্থায় বেশ বিপাকে পড়েছেন তাদের বাবা-মা তথা অভিভাবকরা।

দেখা গেছে স্কুল খোলা থাকলে পড়াশোনা কিছুটা ভালো হয়। বন্ধুদের সাথে দেখা আবার হৈ হুল্লোড় সহ অনেক কিছুতে তাদের ভালো একটা সময় কাটে। অপর দিকে স্কুল তথা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়্তারা সারাক্ষণ ফোন নিয়ে পড়ে থাকে। গেমস ছাড়া বাচ্চারা কিছুই বোঝে না। অপরদিকে বড়ড়া সারাদিন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরে থাকে কোন কারন ছাড়াই।

এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পঙ্গু ও মেধাশূন্য এক ভবিষ্যতের দিকে অজান্তেই ছুটে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাতে খুলে দেওয়া হয় সেদিকে সরকারকে দৃষ্টি দেওয়ার তাগিদ দেন তারা।

আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনেস্কোর দেওয়া এক তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের তালিকায় বিশ্বে সবার শীর্ষে বাংলাদেশ। কিন্তু উল্টো অবস্থা আক্রান্তের হারে। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ টিকা দেওয়াও হয়ে গেছে। এরপরও কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ, এমন প্রশ্ন অনেকের। এডুকেশন ওয়াচের গবেষক ড. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা পঙ্গু এক ভবিষ্যতের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছি। তাই স্বাস্থ্যবিধি আরও শক্তিশালী করে হলেও স্কুলগুলো খুলে দিতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলছেন, করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করেই বেঁচে থাকতে হবে; যার কারণে বৃহত্তর পরিকল্পনার দিকে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে অনেকগুলো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে টিভি ক্লাস, অনলাইন ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট রয়েছে।

উল্লেখ্য, জাতির অপূরণীয় ক্ষতি ও ভবিষ্যত প্রজন্মের নেতিবাচক কোন আবহ সৃষ্টির অনেক হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা আশু প্রয়োজন। অতিদ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে অভিভাবক, শিক্ষক, সচেতন শিক্ষার্থী সহ সংশ্লিষ্টদের। মেধাসমৃদ্ধ এক আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে আমাদের প্রজন্মকে তৈরী করতে হবে ভালোভাবে।

বার্তাবাজার/ এম এইচ আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর