নিজের ছেলে মারা যান হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায়। ছেলের কবর হয়নি। পুলিশের দেওয়া কাপড় দেখে নিশ্চিত হোন ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে। এরপর থেকে বদলে যান ভারতের অযোধ্যার মোহাম্মাদ শরিফ। লেগে যান বেওয়ারিশ লাশ সৎকারে।
মুসলিমদের কবরে নামানো আর হিন্দুদের চিতায় তোলার কাজটা তিনি করেন পরম মমতায়। যেন প্রতিবারই নিজ ছেলে মোহাম্মাদ রইসকে সৎকার করেন তিনি।
এত এত বেওয়ারিশ লাশের দাফন,দাহ করার কারনে সামাজিকভাবে অনেক লাঞ্চনাও তাকে সইতে হয়েছে। একঘরে করে রেখেছিল প্রতিবেশিরা। তবুও তিনি ক্ষান্ত হোননি।
অযোধ্যা ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের এক অফিসার জানান, “আমরা কত লাশ শরিফ চাচার হাতে তোলে দিয়েছি তার কোনো হিসাব নেই। কমপক্ষে আড়াই হাজারতো হবেই”
আবার ভারতীয় গণমাধ্যমে ২৫ হাজার লাশের কথাও উল্লেখ করা আছে।
শতকোটি মানুষের দেশ ভারতে প্রায়ই নানান দুর্ঘটনায় জমে যায় লাশের স্তুপ। এই লাশগুলো দাফন অথবা চিতায় তোলে মোহাম্মাদ শরীফের মতন বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন।
মোহাম্মাদ শরীফ তার অবদানের স্বীকৃতিসরুপ ভারত সকারের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পদ্মশ্রীতেও ভূষিত হয়েছেন। কিন্তু পেশায় এখনও তিনি সাইকেল মেকানিক। অতচ নেশায় একজন উদার মনের দেবতুল্য মানুষ।
পুলিশের কাছ থেকে লাশ বুঝে পেয়ে লাশকে গোসল করান তিনি। তখন তিনি বুঝতে পারেন লাশটি হিন্দু না মুসলিমের। মুসলিম হলে ধর্মীও রীতিমত জানাজা পড়ে লাশের কবর দেন।
আর যদি হিন্দুর হয় তাহলে ৪ কিলোমিটার দুরের একটা চিতায় নিয়ে হিন্দুদের রীতি অনুযায়ী সেটা দাহ করেন।
এইকাজে তার দুজন বেতনভুক্ত সহকারি আছে। শরিফ চাচার সাথে ব্যবসা করা কিছু দোকানী তাকে অর্থ সহায়ত দিয়ে থাকেন।
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়ার পরেও তিনি থেমে থাকেন নি। তিনি জানান আমৃত্যু তিনি এই কাজ চালিয়ে যাবেন। নয়ত আবার আগের মত মৃতদেহকে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হবে।
বার্তা বাজার/এসজে