সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের নতুন নেতৃত্বে জাবি

মোঃ রায়হান চৌধুরী, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্বিক পরিস্থিতি ও দলের পুনর্গঠন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভিসি বিরোধী জোট “সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’। সম্মেলনে পুনর্গঠিত কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত করা হয় জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার এবং সদস্য সচিব করা হয় পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিনকে।

আওয়ামীলীগের একাংশ, জাতীয়তাবাদী ও বামপন্থী শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত এই জোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে রবিবার দুপুর ১২টায় এই সংবাদ সম্মেলন করে। এসময় ঘোষিত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শামছুল আলম সেলিম ও অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস। সদস্য হিসেবে রয়েছেন- অধ্যাপক সোহেল রানা, অধ্যাপক খবির উদ্দিন, অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক সুফি মুহাম্মদ তারেক, অধ্যাপক মো: নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক কবিরুল বাশার, অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার, অধ্যাপক তারেক রেজা, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, অধ্যাপক মো: মনোয়ার হোসেন তুহিন, সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সদস্য সচিব বলেন, “ভিসির এ্যাক্ট বিরোধী ও স্বেচ্ছাচারী কর্মকা-, শিক্ষা ও গবেষণাকার্যক্রমে স্থবিরতা, সীমাহীন দুর্নীতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অধিকার হরণ, মর্যাদাহানি ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে আমরা আবারও আন্দোলনে নামবো।”

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, “উপাচার্য ০৬ মে ২০১৯ তারিখের মধ্যে ডিন, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও পর্যন্ত কোন প্রকার নির্বাচন হয়নি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ভয়ানকভাবে অবনমন ঘটেছে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে, শিক্ষার পরিবেশ ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে আগের যেকোনো অবস্থার চেয়ে খারাপভাবে, ন্যাক্কারজনকভাবে সকল পর্যায়ে ভিসি তাঁর পরিবার ও গোষ্ঠীতন্ত্র চালু করেছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়নের লক্ষ্যে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে সেটির টেন্ডার প্রক্রিয়া ছিল অস্বচ্ছ এবং এই ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল লঙ্ঘিত হয়েছে।”

এছাড়াও ভিসি বিরোধী এই জোটের সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদারসহ যারা জোট ত্যাগ করে ভিসিপন্থী দলে যোগ দিয়েছেন তাদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এদের মধ্যে যারা জোটের প্রার্থী হয়ে গত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন তাদের এখন পদত্যাগ করা উচিৎ বলে মত দেওয়া হয়।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অধ্যাপক অধ্যাপক সোহেল রানা, সদস্য অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস। ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের’ সম্পাদক অধ্যাপক খবির উদ্দিন। বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক নূরুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, এ বছরের ২২ জানুয়ারীতে ভিসি বিরোধী এই জোট আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে এই জোট সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৫টি পদে বিপুল ভোটে জয় লাভ করে। আত্মপ্রকাশের পাঁচ মাসের মাথায় আহ্বায়কসহ অনেক সদস্য ভিসিপন্থী গ্রুপে যোগ দেয়। এখন নতুন করে পুনর্গঠনের মাধ্যমে আবারও ভিসি বিরোধী আন্দোলনকে চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে জোটটি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর