সাফল্যের ২ বছরে বশেফমুবিপ্রবি উপাচার্য

জামালপুরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ এর দুইবছর পূর্তি হল আজ(১৯ নভেম্বর)। যিনি দেশ-বিদেশে অর্জিত নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটি যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিকমানের গবেষণানির্ভর ‘মডেল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ গড়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মো. আবদুল হামিদ। তাঁর অভিজ্ঞ ও দুরদর্শী নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে নবীন বিশ্ববিদ্যালয়টি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ। ‘খোকন স্যার’ হিসেবেই সবার কাছে সমাদৃত।

দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই নেমে পড়েন শূন্যে থাকা একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আকৃতি দেওয়ার কাজে। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও পরিকল্পনায় এরই মধ্যে জোরেশোরে শিক্ষা কার্যক্রমও শুরু করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

তাঁর নেতৃত্বে নির্দিষ্ট সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম চালু, সিন্ডিকেটসহ সংশ্লিষ্ট পর্ষদ গঠন, স্থায়ী ক্যাম্পাসে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ এবং সার্বিক কাজ শুরু হয়।

আন্তঃবিভাগ খেলাধুলার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জনকল্যাণে নিবেদিত মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজেও সম্পৃক্ত করছেন তিনি। শিক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যেক্রমের মাধ্যমে এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের প্রিয় এবং আদর্শ শিক্ষকের জায়গাটি দখল করে নিয়েছেন মানুষ গড়ার কারিগর অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ।

কোভিড-১৯ এর ভয়াবহ সময়েও শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নেওয়া থেকে শুরু করে সার্বিক দেখভাল করে চলেছেন তিনি। বন্ধের এই সময়টায় শিক্ষার্থীরা যাতে হতাশ হয়ে না পড়ে সেজন্য নিয়মিত ভার্চুয়ালি শিক্ষণ প্রোগ্রামের আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইউরোপ-আমেরিকার নামকরা বহু গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন। চাইলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারতেন। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন দেশ ও মানুষের কল্যাণে। তাঁর প্রায় ৫২টি গবেষণাপত্র দেশি-বিদেশি জার্নালে।

ড. সামসুদ্দিনের জন্ম রাজশাহীতে। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা, সবেই পদ্মাপাড়ের নান্দনিক এই শহরে। দেশের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ মতিহারের সবুজ ক্যাম্পাস রাবির ভূ-ত্তত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ থেকে ১৯৭৯ সালে স্নাতক ও ১৯৮২-তে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন সৈয়দ সামসুদ্দিন।

শুরু হয় ঈর্ষণীয় ভবিষ্যত নির্মাণের পথে তাঁর বিস্ময়কর যাত্রা। রাবির ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তরে প্রথম বিভাগে প্রথম হন তিনি। এরপর ১৯৮৩ সালে নিজ বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। শুরু হয় তার কর্মজীবনের নতুন পথচলা।

১৯৯৩ সালে ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমদ প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন রাবির ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে। ২০০৪ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত নিজ বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও হলের। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত রাবির মাদার বখশ হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি লিমিটেডের বোর্ড পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ৭ বছর। রাবি প্রেসের প্রশাসক ছাড়াও দায়িত্ব পালন করেছেন রাবি সিনেট ও সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে।

রাবির বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অফিসার কল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এই প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ। এখনও দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ড. সামসুদ্দিন। বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ নিয়ে নিয়মিত কলাম লিখছেন ভারতের নয়াদিল্লির জাতীয় পরিবেশবিদ্যা একাডেমির আজীবন সদস্য।

বার্তাবাজার/অমি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর