এসআইসহ চারজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ, আটক ৩

যশোরের শার্শা উপজেলায় পুলিশের উপপরিদর্শকসহ (এসআই) চারজনের বিরুদ্ধে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—শার্শার চটকাপোতা গ্রামের কামরুল ইসলাম, লক্ষণপুর গ্রামের ওমর আলী (৫০) ও আবদুল লতিফ (৫০)। অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম খায়রুল আলম। তিনি শার্শা থানার গোড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে ছিলেন। খায়রুলের বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায়। তাকে এখনো আটক করা হয়নি।

ওই নারীর দাবি, ধর্ষণের সময় পুলিশ সদস্যসহ চারজন উপস্থিত ছিলেন। এসআই খায়রুল ও তার তথ্যদাতা (সোর্স) কামরুল তাকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলছেন, মঙ্গলবার বিকেলে ওই নারীর সামনে এসআই খায়রুলসহ চারজনকে হাজির করা হয়। তিনি খায়রুল ছাড়া অপর তিনজনকে চিনতে পেরেছেন।

ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী একসময় চোরাচালানিদের পণ্য বহন করতেন। তবে এখন কৃষিকাজ করেন। নয় দিন আগে এসআই খায়রুল বাড়ি থেকে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যান। পরে এসআই খাইরুল তাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় ওই নারীর স্বামীর কাছে ৫০ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া গেছে বলে আদালতে চালান করে দেওয়া হয়। থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানালেও কেউ তাঁর কথা শোনেনি বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।

ওই নারীর অভিযোগ, ‘সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুল, তার সোর্স কামারুল ও গ্রামের আরও তিন থেকে চারজন বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করেন। এত রাতে দরজা খুলতে না চাইলে তারা আমার স্বামীর নামে মামলা দেবেন বলে হুমকি দেন। তখন আমি দরজা খুলে দিই। এ সময় খায়রুল আবারও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। ওই টাকা না দিলে ৫৪ ধারায় মামলা করার হুমকি দেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে খায়রুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর তিনি ও কামরুল দুজন মিলে আমাকে ধর্ষণ করেন।’

ওই নারী আরও বলেন, ‘তারা (এস আই খায়রুলসহ অন্যরা) চলে যাওয়ার পর ঘটনাটি প্রতিবেশীদের জানাই। প্রতিবেশীরা আমাকে মামলার পরামর্শ দেন। মামলা করতে হলে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করাতে হবে। এ কারণে আমি থানায় না গিয়ে সোজা যশোর জেনারেল হাসপাতালে যাই।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আরিফ আহম্মেদ বলেন, ‘মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই নারী জরুরি বিভাগে আসেন। অভিযোগ শুনে তাকে জানাই যে, এ ধরনের পরীক্ষা পুলিশের মাধ্যমে না এলে করা যায় না। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিনুজ্জামান ওই নারীকে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যান।’

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মশিউর রহমান বলেন, ওই নারী তিনজনের নাম উল্লেখসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা করেছেন।

পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ‘অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পুলিশ সদস্য বলে তদন্তে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

এদিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আরিফ আহম্মেদ জানিয়েছেন যে, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন আসার পর বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর