স্যাটেলাইট চ্যানেলের আড়ালে প্রতারণার ফাঁদ

বেদের মেয়ে জোসনা ছায়াছবির প্রযোজক প্রয়াত আব্বাস উল্লাহর হাত ধরে প্রতিষ্ঠা লাভ করে আনন্দ টিভি। প্রথমে বিনোদন ভিত্তিক টেলিভিশন থাকলেও পরে এই টেলিভিশনটি রুপ নেয় বিনোদন ও নিউজ ভিত্তিক স্যাটেলাইট টেলিভিশন হিসেবে। আনন্দ টেলিভিশনের সংবাদ প্রচারের অনুমোদন আছে কিনা সেটি নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকের মাঝেই।

প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রশাসনিক বিভাগে চাকুরি নেয় বিজয় টিভি থেকে নানা বিতর্কে জড়িত সাইফুল ইসলাম। ততকালীন সময়ে বার্তা বিভাগে দায়িত্বরতদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় তাদেরকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে ছাটাই করা হয়। এরপর টেলিভিশনটির সব দায়িত্ব বুঝে নেয় সাইফুল ইসলাম।

আনন্দ টিভির চেয়ারম্যান আব্বাস উল্লাহ মারা যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির হাল ধরেন তার ছেলে হাসান তৌফিক আব্বাস। তিনি বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তার পিএস হিসেবে রয়েছেন জাহিদ হাসান।

বছরখানেক ধরে সাইফুল সারা দেশে আনন্দ টিভিতে সাংবাদিক নিয়োগ বানিজ্য করে আসছে। উপজেলা পর্যায়ে ৩০-৫০ হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ে ৬০হাজার থেকে ১লাখ টাকা নিয়ে থাকেন সাইফুল ইসলাম।

বিনিময়ে সংবাদকর্মীদের দেওয়া হয় আনন্দ টিভির বুম (মাইক্রোফোন), স্টিকার্ড ও আইডি কার্ড। তবে কাউকেই দেওয়া হয়না কোন নিয়োগপত্র। টাকা পয়সা লেনদেন হয় সাইফুলের এক সহযোগীর মাধ্যমে।

কিছুদিন আগে কোন কারণ ছাড়াই এক সিনিয়র সাংবাদিককে চাকুরিচ্যুত করা হয় সেখান থেকে।

গোয়েন্দা তথ্য বলছে, সাইফুল ইসলাম আনন্দ টিভির এডমিন ও এইচ আর হিসেবে নিয়োজিত থাকলেও মন্ত্রনালয়ে ভুল তথ্য দিয়ে নিয়েছেন পিআইডি কার্ড। নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিয়ে তথ্য গোপন করে এই কার্ড সংগ্রহ করেছেন তিনি।

ইতিমধ্যে প্রতারিত গণমাধ্যমকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়ে তুলে ধরেছেন।

সাইফুল ইসলাম বিভিন্ন স্থানে বলে থাকেন আনন্দ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মদের টাকা যোগাতে তিনি প্রতিনিধিদের কাছ থেকে নিয়োগ বানিজ্য করছেন।

তবে সূত্র বলছে, অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামের কাছে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনেক গোপন তথ্য রয়েছে তাই তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেওয়া হয় না।

সাইফুল ইসলাম নিজেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে দাবী করলেও তিনি প্রকৃতপক্ষে বিএনপি ও জামায়াতের পেইড এজেন্ট।

এছারাও টেলিভিশন অফিসে বসেই সাইফুল ইসলাম বিএনপির বেশ কয়েকটি পেইজ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বলেও অভিযোগ আছেন।

সাইফুল ইসলামের জামাত সম্পৃক্ততার বিষয়টি আনন্দ টিভিতে প্রায় ওপেন সিক্রেট।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে বিএনপি-জামাতের পক্ষে সরকার বিরোধী প্রচারণার মূল ঘাঁটি হিসেবে আনন্দ টেলিভিশনের কার্যালয় কাজ করছে।

‘জিয়া টিভি’ নামে অনলাইন টেলিভিশনের কাজ চলছে।

‘জিয়া টিভি’ নামে একটি অনলাইন টেলিভিশনের সম্প্রচার অতি গোপনে পরিচালনা করেন আনন্দ টেলিভিশনের এডিটিং প্যানেল যা এডমিন সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে হয়ে থাকে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে আনন্দ টিভির মালিকপক্ষ জড়িত আছে কিনা সেটাও জানা যায়নি।

তবে বার্তা বাজারের অনুসন্ধানী টিম আরও তথ্য ও প্রমাণ নিয়ে আসছে দ্বিতীয় পর্বে।

বার্তাবাজার/র.হৃ.ই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর