প্রতিবন্ধী মনোয়ারার মায়ের সেই স্বপ্ন পুরণ হবে কি ?

দোকানে দোকানে জন্মান্ধ প্রতিবন্ধী মেয়ে মনোয়ারাকে নিয়ে ভিক্ষে করছেন আয়শা খাতুন (৬৫)। মাথায় লম্বা গোমটা টানা যখন কেউ কিছু দেন মেয়ের পেছন থেকে হাত বাড়িয়ে নেন। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এভাবেই দ্ধারে দ্বারে হাত পেতে একমাত্র প্রতিবন্ধী মেয়েকে লাল পালন করে আসছেন তিনি।

দেখে একটু লাজুক আর অন্য ভিক্ষুক থেকে একটু আলাদা মনে হলো তাকে। এগিয়ে গিয়ে পরিচয় জিজ্ঞেস করতেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠলেন আয়শা খাতুন। বাবার বাড়ির পরিচয় গোপন রেখে স্বামীর বাড়ির পরিচয় দিলেন।

বললেন, দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি ভিক্ষে করতে মন চায় না। প্রতিবন্ধী মনোয়ারা ছাড়া আর কোন সন্তান নেই। মনোয়ারা একদিকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী অন্য দিকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীও। স্বামী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অসুখে ভোগছেন সম্পদ বলতে হাত’পা ছাড়া আর কিছুই নেই। এক সময় জমি জমা ছিল স্বামীর রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে সব হারাতে হয়েছে। এখন যে ভিক্ষে করা ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই।

মেয়েটির বিয়ের বয়স হয়েছে। কিন্তু কি করবো এ মেয়েকে তো বিয়ে দেওয়া যায় না। চারদিকে যেসব ঘটনা কানে আসে মেয়েটিকে বাড়িতে রেখে আসতেও যে ভয় করে। তাই সাথে নিয়েই ভিক্ষে করতে বের হই।

তিনি আরো জানালেন, এক সময় গবাদি পশু পালন করে সংসার চালাতেন এখন টাকার অভাবে তিনি সেটিও করতে পারছেন না। সাহায্য পেলে একটি গাভী কিনে লালন-পালন করলে হয়তো এভাবে ভিক্ষে করতে হতো না। গতরে খেটে খাওয়ার মতো সাহায্য পেলে তিনি আর ভিক্ষে করবেন না।

৩১ জুলাই বুধবার দুপুরে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের নতুন বাজারের গলিতে দারিদ্র অসহায় প্রতিবন্ধী মনোয়ারা কে নিয়ে মা আয়শা খাতুন (৬৫) কে দোকানে দোকানে ভিক্ষে করতে দেখা যায়। আয়শা খাতুনের স্বামী আব্দুল হাই দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তাই বিবাহযোগ্য প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়েই ভিক্ষা করতে হয় তাকে। তাদের গ্রামের বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আশ্রবপুর গ্রামে।

বার্তাবাজার/আরএইচ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর