শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢালার অভিযোগে আটক শিক্ষার্থী

ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (ইউএসটিসি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগের বিচার না হওয়ায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এর আগে মাসুদ মাহমুদকে অফিস থেকে বের করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদ ইউএসটিসির ইংরেজি বিভাগে উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত আছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর গত বছর তিনি ইউএসটিসিতে যোগ দেন। এর আগে গত মাসে মাস্টার্সের এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী মাসুদ মাহমুদকে অফিস থেকে টেনে বের করে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। খুলশী থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী মাসুদ মাহমুদ স্যারের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আজ অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদ লিফটে ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের কয়েকজন ছাত্রীকে ‘ধর্ষণের হুমকি’ দেন। এর প্রতিবাদেই তারা সড়ক অবরোধ করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদুন্নবী বলেন, ‘সকালে আমি ক্যাম্পাসে আসার পর ক্লাস না করে নিচে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখন চারতলায় হইচই শুনে আমি সেখানে যাই এবং দেখি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাসুদ মাহমুদ স্যারের তর্কবিতর্ক চলছে।

মাস্টার্সের কয়েকজন আপু অভিযোগ করেন, মাসুদ মাহমুদ স্যার আজকে লিফটে তাদের ধর্ষণ করার হুমকি দিয়েছেন। এই ঘটনার জের ধরেই শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন।’ অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে জানতে মাসুদ মাহমুদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে প্রতিবারই তা বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় প্রায় একঘণ্টা ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে চলে যান এবং সেখানে বিক্ষোভ করেন। এ সময় শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেওয়ার অভিযোগে মাহমুদুল হাসান নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। আটক মাহমুদুল হাসান ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেওয়ার ঘটনায় মাহমুদুল হাসানকে ক্যাম্পাস থেকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহমুদুল হাসান ওই শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢালার বিষয়টি স্বীকার করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিতভাবেই শিক্ষার্থীরা ঘটিয়েছে। না হয় ক্যাম্পাসে কেরোসিন কোথা থেকে পেলো তারা। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর